জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: ম্যাচের শেষ মিনিটে ডান দিকের উইং থেকে এডু বেদিয়ার লম্বা হাওয়ায় ভাসানো ফ্রি কিক সোজা ঢুকে পড়ল গোলে। বক্সের মধ্যে থাকা দুই দলের ফুটবলাররা শুধু দেখলেন। কেউই বল ছুঁতেও পারলেন না। এই শেষ মুহূর্তের গোলেই ইস্টবেঙ্গল এফসি-র হাত থেকে জয় ছিনিয়ে নিল এফসি গোয়া (ISL 2022-23 EB vs Goa)। ঘরের মাঠে চলতি হিরো আইএসএলের প্রথম ম্যাচে লাল-হলুদ শিবিরের প্রথম পয়েন্ট পাওয়ার স্বপ্ন কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ভেঙে চুরমার করে দিলেন এডু।
ম্যাচের সাত মিনিটের মাথায় ব্র্যান্ডন ফার্নান্ডেজের গোলে এগিয়ে যায় এফসি গোয়া। প্রথমার্ধে তারাই আধিপক্য বিস্তার করে। দ্বিতীয়ার্ধে নিজেদের দলে পরিবর্তন এনে ও কৌশল পাল্টে ঘুরে দাঁড়ায় ইস্টবেঙ্গল এফসি। ৬৪ মিনিটের মাথায় ক্লেটন সিলভার পেনাল্টি থেকে আসা গোলে সমতা আনে তারা। একেবারে শেষে বাড়তি চার মিনিট পেয়ে তা কাজে লাগিয়ে নেয় গোয়ার দলই। প্রথম ম্যাচের মতোই এ দিন ক্লেটন সিলভা ও ভিপি সুহেরকে সামনে রেখে ৪-৪-২-এ দল সাজান স্টিফেন কনস্টান্টাইন। অন্য দিকে আলভারো ভাজকেজকে আক্রমণে রেখে ৪-২-৩-১-এ দল সাজান এফসি গোয়ার কোচ কার্লোস পেনা।
ইস্টবেঙ্গল এফসি শুরুটা ভাল করলেও সাত মিনিটের মাথায় গোল খেয়ে অনেকটা পিছিয়ে যায় তারা। শুরু থেকে আক্রমণে ওঠায় রক্ষণে যে অনেক ফাঁকা জায়গা তৈরি হয়ে গিয়েছিল, তা বোধহয় খেয়ালই করেননি লাল-হলুদ ফুটবলাররা। সেই জায়গা কাজে লাগিয়ে শুরুতেই গোল পেয়ে যান ব্র্যান্ডন ফার্নান্ডেজ। তবে এই গোলের জন্য তাঁর অর্ধেক কৃতিত্ব দেওয়া উচিত লাল-হলুদ শিবিরের স্প্যানিশ ডিফেন্ডার ইভান গঞ্জালেসকে। বাঁ দিকের উইং দিয়ে ওঠা আলভারো ভাজকেজের লম্বা ক্রস থেকে ব্র্যান্ডন গোলটি পাওয়ার আগে তাঁকে বাধা দিতে যান ইভান। কিন্তু তা মিস করেন তিনি এবং সেই বলই ঝাঁপিয়ে পড়া গোলকিপার কমলজিতের শরীরের ওপর দিয়ে চিপ করে জালে জড়িয়ে দেন অভিজ্ঞ ব্র্যান্ডন।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই জোড়া পরিবর্তন করেন কনস্টান্টাইন। পাসির জায়গায় সার্থক গলুই এবং তুহীনের জায়গায় নামেন নাওরেম মহেশ। তাতে ইস্টবেঙ্গলের আক্রমণে কিছুটা হলেও গতি আসে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই নাওরেম বাঁদিক থেকে একটি আক্রমণের উদ্যোগ নিলেও তাতে ব্যর্থ হন বিপক্ষের রক্ষণের তৎপরতায়। ওই আক্রমণ থেকে আসা ফিরতি বল থেকে গোল করার চেষ্টা করলেও তাঁকে বাধা দেন এডু বেদিয়া। এই ঘটনার জেরে ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলাররা পেনাল্টির জোরালো আবেদন জানালেও তা নাকচ করে দেন রেফারি।
৫৭ মিনিটের মাথায় ফের কাউন্টার অ্যাটাকে ওঠে কলকাতার দল। মাঝমাঠে সার্থকের কাছ থেকে বল নিয়ে ডানদিক দিয়ে উঠে বক্সের বাইরে থেকে নিখুঁত ক্রস দেন ভিপি সুহের, উদ্দেশ্য ও’ডোহার্টি। ডান পায়ে তিনি অনবদ্য মাপা শট নিলেও বল বারের সামান্য ওপর দিয়ে বেরিয়ে যায়। ৬১ মিনিটের মাথায় শৌভিকের জায়গায় নামানো হয় মহম্মদ মোবাশির রহমানকে এবং তিনি মাঠে আসার পরেই পেনাল্টি পায় ইস্টবেঙ্গল এফসি। বল নিয়ে বক্সে ঢোকা ভিপি সুহেরকে ওয়ান টু ওয়ান অবস্থায় বাধা দেন ধীরজ। এ বার আর পেনাল্টি দিতে ভুল করেননি রেফারি। আর সেই পেনাল্টি থেকেই সমতা আনেন ক্লেটন সিলভা।
১-১ হয়ে যাওয়ার পর ব্যবধান তৈরির জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে লাল-হলুদ ব্রিগেড। একই ভাবে চেষ্টা শুরু করে এফসি গোয়াও। কিন্তু ম্যাচের একেবারে শেষ মুহূর্তে আর নিজেদের রক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল এফসি। ডান দিকের উইং থেকে এডু বেদিয়ার লম্বা, হাওয়ায় ভাসানো ফ্রি কিক বক্সে ড্রপ করে সোজা গোলে ঢুকে পড়ে (২-১)। ইস্টবেঙ্গলের কোনও ডিফেন্ডার বা গোলকিপার বলটি অনুসরণ করলেন না কেন, সেটাই বোঝা গেল না। শেষ মিনিটে এমন গোল খাওয়ার পরে আর ম্যাচে ফেরা কার্যত অসম্ভব ছিল।
ইস্টবেঙ্গল দল: কমলজিৎ সিং (গোল), লালুচুঙনুঙ্গা, ইভান গঞ্জালেজ, জেরি লালরিনজুয়ালা, তুহীন দাস (নাওরেম মহেশ), শৌভিক চক্রবর্তী (মোবাশির রহমান), জর্ডন ও’ডোহার্টি, অ্যালেক্স লিমা (কিরিয়াকু), সুমিত পাসি (সার্থক গলুই), ক্লেটন সিলভা (অধি), ভিপি সুহের (সেম্বয় হাওকিপ)।
(লেখা ও ছবি আইএসএল ওয়েবসাইট থেকে)
প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে
জাস্ট দুনিয়ার সঙ্গে গোটা বিশ্বকে রাখুন নিজের পকেটে। Follow Us On: Facebook, Twitter, Google