ISL 8 SCEB vs HFC ম্যাচে ৪ গোল হজম, রক্ষণের দুর্বলতা ডোবাল দলকে

ISL 8 SCEB vs HFC

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: ISL 8 SCEB vs HFC ম্যাচে ফের ডিফেন্সের দুর্বলতা ভোগাল এসসি ইস্টবেঙ্গলকে। তাদের রক্ষণের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে সোমবার তিলক ময়দান স্টেডিয়ামে ৪-০ গোলে জিতল হায়দরাবাদ এফসি। তাদের নাইজেরিয়ান গোলমেশিন বার্থোলোমিউ ওগবেচে এ দিন হ্যাটট্রিক করেন। হিরো আইএসএলের চলতি মরশুমে এক ডজন গোল করে ফেললেন তিনি। সব মিলিয়ে হিরো আইএসএলে ৪৭ গোল হল তাঁর। সর্বোচ্চ স্কোরার ফেরান কোরোমিনাস ও সুনীল ছেত্রীকে ছুঁতে তাঁর দরকার আর একটি গোল। এ দিন আগাগোড়া আধিপত্য বিস্তার করা ম্যাচের প্রথমার্ধেই তিন গোলে এগিয়ে যায় হায়দরাবাদ। দু’টি গোল করেন ওগবেচে ও একটি করেন অনিকেত যাদব। দ্বিতীয়ার্ধে তৃতীয় গোলটি করে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করে ফেলেন নাইজেরিয়ান তারকা। চলতি লিগে গোলের সংখ্যার (২৫) দিক থেকে যেমন এক নম্বরে উঠে এল হায়দরাবাদ, তেমনই এই দাপুটে জয়ের ফলে লিগ টেবলেও তারা শীর্ষে উঠে এল। লিগের ছ’নম্বর হারের পরে এসসি ইস্টবেঙ্গল ফের নেমে গেল এগারো নম্বরে।

এর পরই ২৯ জানুয়ারি কলকাতা ডার্বি। তার আগে বড় ব্যবধানে এই হার এসসি ইস্টবেঙ্গলকে মানসিক ভাবে হয়তো অনেকটাই পিছিয়ে দেবে। মাত্র পাঁচ দিনের মধ্যে কী ভাবে নিজেদের মানসিক ভাবে চাঙ্গা করে তোলে তারা, সেটাই দেখার। পাঁচ ম্যাচের নির্বাসন কাটিয়ে মাঠে ফেরা আন্তোনিও পেরোসেভিচ ও সেম্বয় হাওকিপকে একেবারে সামনে রেখে এ দিন ৪-৪-২ ছকে দল সাজান এসসি ইস্টবেঙ্গলের কোচ মারিও রিভেরা। গত ম্যাচের নায়ক নাওরেম মহেশকে তিনি রাখেন রাইট হাফ হিসেবে। অন্য দিকে হাভিয়ে সিভেইরোকে সামনে রেখে ৪-২-৩-১-এ দল সাজান হায়দরাবাদ কোচ মানোলো মার্কেজ। তাদের প্রধান স্কোরার ওগবেচে শুরু করেন তাঁর পিছনে থেকে। কিন্তু ম্যাচ শুরু হওয়ার পরে ওগবেচেকেই আক্রমণের সর্বাগ্রে দেখা যায়। প্রথমার্ধে হায়দরাবাদের আধিপত্যই ছিল বেশি। তবে তাদের দাপট আরও বেশি লেগেছে এসসি ইস্টবেঙ্গলের খেলোয়াড়দের নাাগাড়ে ভুলের জন্য। ২১ মিনিটে যে গোলটি করেন ওগবেচে, তার জন্য গোলকিপার অরিন্দম ভট্টাচার্যকে দায়ী করা যেতেই পারে।

শৌভিক চক্রবর্তীর কর্নার থেকে এই গোলটি পান ওগবেচে। জটলার মধ্যে থেকে সবচেয়ে বেশি লাফিয়ে হেড করেন নাইজেরিয়ান গোলমেশিন। এর আগে যে দক্ষতায় প্রচুর অবধারিত গোল বাঁচিয়েছেন অরিন্দম, এ দিন সেই দক্ষতা দেখা যায়নি। ওগবেচের মাথা থেকে আসা বলের লাইনে থাকলেও তাঁর বুকে লেগে বল গোলে ঢুকে যায়। এসসি ইস্টবেঙ্গলের ডিফেন্স গত ম্যাচে যতটা ভাল খেলেছিল, এ দিন সেটা দেখা যায়নি। ২৮ মিনিটের মাথায় ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পেয়ে যান ওগবেচে। শৌভিক, সিভেইরোর পা হয়ে বল আসে তাঁর কাছে। কিন্তু তিনি বারের ওপর দিয়ে বল উড়িয়ে দেন। ৩৯ মিনিটের মাথায় এসসি ইস্টবেঙ্গলের সমতা আনার পরিকল্পনায় জল ঢেলে দেন জোয়াও ভিক্টর। মহম্মদ রফিকের অসাধারণ ও মাপা ফ্রি কিকে হেড করে বল গোলের দিকে পাঠান সেম্বয় হাওকিপ। হায়দরাবাদের গোলকিপার কাট্টিমণি বলে ঘুঁষি মেরে বার করে দিলেও তাতে তেমন জোর ছিল না। ফিরতি বল পেরোসেভিচের পায়ে পড়ে ও ক্রোয়েশিয়ান ফরোয়ার্ড সর্বশক্তি দিয়ে ভলি করেন গোলের দিকে। ভিক্টর গোল লাইনে ঝাঁপিয়ে পড়ে শরীর দিয়ে সেই গোল না বাঁচালে তখনই সমতা এনে ফেলত লাল-হলুদ বাহিনী।

এই গোলের সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার পাঁচ মিনিট পরেই ফের গোল করে ব্যবধান বাড়িয়ে নেন ওগবেচে। আদিল খান ক্লিয়ারেন্সে ব্যর্থ হলে সেই বল নিয়ে ওগবেচে বক্সে ঢুকে গোলে ঠেলে দেন। অরিন্দমের বিরুদ্ধে ওয়ান টু ওয়ান পরিস্থিতিতে ঠাণ্ডা মাথায় তাঁকে ধোঁকা দিয়ে গোলে বল ঠেলে দিতে ভুল করেননি। দু’গোল খেয়ে যখন লাল-হলুদ বাহিনীর ডিফেন্সে আরও তৎপর হওয়ার কথা, তখনই তাদের রক্ষণকে ভেঙে চুরমার করে দিয়ে স্টপেজ টাইমে দলের তৃতীয় গোলটি কের দেন অনিকেত যাদব। বাঁ দিক দিয়ে উঠে কাট ইন করে দ্বিতীয় পোস্টে মাপা শট নেন হায়দরাবাদের উইঙ্গার এবং অরিন্দমকে ফের পরাস্ত করে বল পোস্টে লেগে গোলে ঢুকে যায়।

তিন গোলে এগিয়ে থাকা হায়দরাবাদ দ্বিতীয়ার্ধে ক্রমশ রক্ষণাত্মক হতে শুরু করে এবং কাউন্টার অ্যাটাকে মন দেয়। ইস্টবেঙ্গলের রক্ষণের দুর্বলতার সুযোগেই ৭৪ মিনিটের মাথায় হ্যাটট্রিক পেয়ে যান ওগবেচে। সিভেইরোর গোলমুখী শট এক ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে ফিরে আসে বক্সের বাইরে নাইজেরিয়ান স্ট্রাইকারের পায়ে এবং তিনি দূরপাল্লার শটে গোল করতে বিন্দুমাত্র ভুল করেননি। এসসি ইস্টবেঙ্গল যখন ৮৪ মিনিটের মাথায় পেনাল্টি থেকে অন্তত একটি গোল শোধের সুযোগ পায়, তাও হাতছাড়া করেন ফ্রানিও পর্চে। তাঁর পেনাল্টি শট বাঁচিয়ে দেন কাট্টিমণি।

এসসি ইস্টবেঙ্গল দল: অরিন্দম ভট্টাচার্য (গোল), আদিল খানঅঙ্কিত মুখার্জি (হীরা মন্ডল)ফ্রানিও পর্চে, ড্যারেন সিডোল, মহম্মদ রফিক (অ) (জ্যাকিচন্দ সিং), সৌরভ দাস (ওয়াহেংবাম লুয়াং), অমরজিৎ সিং কিয়ামআন্তোনিও পেরোসেভিচ (লালরিনলিয়ানা হামতে), নাওরেম মহেশ, সেম্বয় হাওকিপ (মার্সেলো রিবেইরো)।

(তথ্য ও লেখা আইএসএল ওয়েবসাইট)

প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)