ISL 8 SCEB vs OFC: ১০ গোলের থ্রিলার শেষে হার লাল-হলুদের

ISL 8 SCEB vs OFC

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: মঙ্গলবার তিলক ময়দানে গোলের বন্যা বইল ISL 8 SCEB vs OFC ম্যাচে। পুরো ম্যাচে দশ-দশটি গোল হল। যেমন গত মরশুমের দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে হয়েছিল এগারোটি। সে বারে যেমন ৬-৫-এ ম্যাচ জিতেছিল ওডিশা। এ বার স্কোরলাইন তাদের পক্ষেই দাঁড়াল ৬-৪। এদিন আগে লাল হলুদের ডাচ খেলোয়াড় ড্যারেন সিডোলই গোল করে দলকে এগিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু হেক্টর রোডাসের জোড়া গোল ও প্রাক্তন সবুজ-মেরুন তারকা হাভিয়ে হার্নান্ডেজের অসাধারণ গোলে পিছিয়ে যায় কলকাতার দল। ৯০ মিনিটের হিসেব কষতে বসলে এ দিনের ম্যাচে খুবই আগোছালো ফুটবল খেলে এসসি ইস্টবেঙ্গল। গতবার সর্বশেষ স্থানে থাকা ও সদ্য বেঙ্গালুরু এফসি-কে হারিয়ে আসা ওড়িশাকে বেশ উজ্জ্বল লেগেছে এই ম্যাচে।

দ্বিতীয়ার্ধে দুই দলেরই পরিবর্ত খেলোয়াড়রা মাঠে নেমে ছবিটাই বদলে দেন। একদিকে ওড়িশার স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড আরিদাই সুয়ারেজ রীতিমতো ঝড় তুলে দু’গোল করেন। অন্য দিকে, ড্যানিয়েল চিমাও জোড়া গোল করে দলকে লড়াইয়ের জায়গায় নিয়ে আসেন। লাল-হলুদ শিবিরের রিজার্ভ বেঞ্চ থেকে নামা আর এক তরুণ খেলোয়াড় সেম্বয় হাওকিপও দুর্দান্ত একটি গোল করে দলকে চাঙ্গা করেন। কিন্তু কোনও সময়ই প্রতিপক্ষকে পিছনে ফেলে দিতে পারেনি কলকাতার দল। শেষ পর্যন্ত গত মরশুমের শেষ ম্যাচের স্মৃতি ফিরিয়ে ৬-৪-এ ম্যাচ জেতে ওড়িশা। ম্যাচের শেষ ১৩ মিনিটে ৫টিগোল হয়। শেষ ৩ মিনিটে হয় ৩টি গোল।

এ দিন প্রথম দলে তিনটি পরিবর্তন করেন এসসি ইস্টবেঙ্গল কোচ হোসে মানুয়েল দিয়াজ। শুভম সেন, হীরা মণ্ডল ও আমির দার্ভিসেভিচকে প্রথম এগারোয় রাখেন তিনি। মর্চেলাকে রাখেন রিজার্ভ বেঞ্চে। ৪-৪-২ ছকে দল সাজান পেরোসেভিচ ও সিডোলকে সামনে রেখে। শুরু থেকেই এ দিন বিপক্ষকে চাপে রাখার চেষ্টা শুরু করে কলকাতার দল। ডার্বি হারের ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার এটাই বোধহয় সেরা উপায় ছিল। ডাচ মিডফিল্ডার সিডোল, যাঁকে ভারতে আসার আগেও কোচিং করিয়েছিলেন দিয়াজ, তাঁকে সামনে রাখার সিদ্ধান্ত কিছুটা অপ্রত্যাশিত মনে হলেও এই সিডোলই ১৩ মিনিটের মাথায় দলকে এগিয়ে দেন দুর্দান্ত গোল করে। ডার্বির ধাক্কা সামলে সাফল্যের রাস্তায় ফেরার লড়াইয়ে এই গোলটাই অনেকটা কাজে লাগে লাল-হলুদ শিবিরের। বাঁ দিক থেকে লম্বা থ্রোয়ে বল পেয়ে যখন বক্সের মাথা থেকে সোজা গোলে শট নেন আয়াক্সের প্রাক্তন খেলোয়াড়, তখন সম্পূর্ণ অরক্ষিত অবস্থায় ছিলেন তিনি।

ISL 8 SCEB vs OFC

৩৩ মিনিটের মাথায় সমতা এনে ফেলে ওড়িশা। হাভিয়ে হার্নান্ডেজের লম্বা পাস থেকে দূরের পোস্টের সামনে থাকা স্প্যানিশ ডিফেন্ডার হেক্টর রোডাস হেড করে জালে বল জড়িয়ে দেন। রোডাসকে মার্ক করার মতো কেউ ছিল না ওখানে। ৪০ মিনিটের মাথায় ফের গোল করেন রোডাস। আবার সেই হাভিয়ের সাহায্যেই। এ বার তাঁর কর্নার সেই হেডেই গোল রোডাসের। ডিফেন্ডার রাজু গায়কোয়াড় তাঁর গায়ে গায়ে লেগে থেকেও আটকাতে পারেননি। ৪৫ মিনিটের মাথায় আবার গোল ওড়িশার। গোলের নায়ক এটিকে মোহনবাগানের প্রাক্তন তারকা হাভিয়ে হার্নান্ডেজ। এ বার তাঁর ইন-সুইঙ্গার কর্নার কিক সোজা এসসি ইস্টেবেঙ্গলের গোলকিপার শুভম সেনের হাতের ওপর দিয়ে গোলে ঢুকে যায়। এখানে শুভম ছাড়া কারও কিছুই করার ছিল না। প্রথম ৪৫ মিনিটে এসসি ইস্টবেঙ্গলের ডিফেন্সে হীরা মন্ডল ছাড়া কাউকেই খুব একটা সচেষ্ট মনে হয়নি।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই হাভিকে বসিয়ে আরিদাই সুয়ারেজকে নামান ওড়িশা কোচ কিকো রামিরেজ। এ ছাড়াও দলের প্রধান স্ট্রাইকার জোনাথাস ক্রিস্চিয়ানকেও তিনি নামান ভিক্টর মঙ্গিলকে তুলে নিয়ে। এদিকে দিয়াজ সিডোলের জায়গায় ড্যানিয়েল চিমা এবং পর্চের জায়গায় টমিস্লাভ মর্সেলাকে নামান। আমির দার্ভিসেভিচকে বসিয়ে তাঁর জায়গায় নামেন অমরজিৎ কিয়াম। ৭১ মিনিটে বক্সের সামনে বাঁ দিক থেকে নিখুঁত ও মাপা ফ্রি কিকে সোজা জালে বল জড়িয়ে দেন ৩৩ বছর বয়সি স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড আরিদাই সুয়ারেজ। এই গোলের পরেই ফের জোড়া পরিবর্তন করেন দিয়াজ। ডিফেন্ডার আদিল খান ও ফরোয়ার্ড সেম্বয় হাওকিপকে নামান লরেঙ্কো ও পেরোসেভিচকে বসিয়ে। মাঠে নামার দশ মিনিটের মধ্যেই দলকে গোল এনে দেন সেম্বয়। বাঁ দিক থেকে ওঠা মহম্মদ রফিকের নিখুঁত ক্রসে দুর্দান্ত হেড করে গোল করেন তরুণ সেম্বয়।

৮২ মিনিটে ব্যবধান বাড়ায় ওড়িশা এফসি। এ বার ডান দিকের কোণ থেকে সোজা গোলে শট নেন তরুণ খেলোয়াড় আইজ্যাক রালতে। সামনে মর্সেলা থাকলেও কিছুই করতে পারেননি তিনি। ড্যানিয়েল চিমাকে এ দিন আগের চেয়ে কিছুটা হলেও সপ্রতিভ মনে হয়েছে। ৯০ মিনিটের মাথায় গোলের সামনে ডান দিকে তৈরি হওয়া জটলা থেকে জোরালো শটে গোল করেন নাইজেরিয়া থেকে আসা এই ফরোয়ার্ড। পরের মিনিটে ফের গোল চিমার। এ বার পেনাল্টি থেকে। এর পর আরিদাই সুয়ারেজ তাঁর দ্বিতীয় গোলটি করেন স্টপেজ টাইমে। যার পরেই খেলা শেষের বাঁশি বেজে ওঠে। জোনাথাসের ব্যাকহিল থেকে বল পেয়ে ডান দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে গোলে শট নেন সুয়ারেজ।

এসসি ইস্টবেঙ্গল দল: শুভম সেন (গোল), জয়নার লরেঙ্কো (আদিল খান), হীরা মন্ডল, রাজু গায়কোয়াড়, ফ্রানিও পর্চে (অধি) (টমিস্লাভ মর্সেলা), মহম্মদ রফিক, আমির দার্ভিসেভিচ (অমরজিৎ সিং কিয়াম), বিকাশ জায়রু, ড্যারেন সিডোল (ড্যানিয়েল চিমা), নাওরেম মহেশ, আন্তোনিও পেরোসেভিচ (সেম্বয় হাওকিপ)।

(তথ্য ও লেখা আইএসএল ওয়েবসাইট থেকে)

প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)