জাস্ট দুনিয়া ব্যুরো: কলকাতা লিগ চ্যাম্পিয়ন মোহনবাগান । ম্যাচ শেষের বাঁশি বাজতেই বদলে গেল মোহনবাগান মাঠের আবহ। গোটা গ্যালারি প্রায় নেমে এল মাঠে। কেউ নাচছে, কেউ কেঁদে ফেলছে। একে অপরকে জড়িয়ে ধরছে। এই দৃশ্য কতকাল দেখেনি গঙ্গাপাড়ের এই ক্লাব। আট আটটা বছর এই প্রত্যাশা বুকে নিয়ে কলকাতা লিগ খেলতে নেমেছে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে গিয়ে হার মানতে হয়েছে। কখনও দ্বিতীয় তো কখনও তৃতীয়। এ বার যেন জেদটা চেপে বসেছিল মরসুমের শুরু থেকেই। পুরো দলের একক দায়িত্ব নিয়ে মরসুম শুরু করেছিলেন কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তী।
এতদিন সঞ্জয় সেনের ছত্রছায়ায় থেকে সাফল্যের ভাগিদার হয়েছেন। কিন্তু একক দক্ষতায় একটা টিমকে এ ভাবে তুলে নিয়ে যাওয়াটা সহজ ছিল না তাঁর জন্য। যখন বাগানের অন্দরের অবস্থা অতটা খারাপ। কর্তারা মাপিট করে মরছেন নিজেদের মধ্যে। তার মধ্যেই দলের ফোকাস এক মুহূর্তের জন্যও টলতে দেননি তিনি। তার ফল পেলেন লিগ শেষের আগেই।
কলকাতা লিগ চ্যাম্পিয়ন মোহনবাগান । ২-০ গোলে কাস্টমসকে হারিয়ে আট বছর পর লিগ জিতে নিল মোহনবাগান। এর আগে সবুজ-মেরুনের ঘরে লিগ এসেছিল ২০০৯ সালে। তার পরের আট বছর শুধুই ইস্টবেঙ্গলের। এ বার অবশ্য লিগের শুরু থেকেই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছিল শঙ্করলালের ছেলেরা। যে ভাবে শুরু করেছিল সে ভাবেই শেষ করল।
এটা কী বললেন টুটু বসু? অপমান করে বসলেন নারী সমাজকেই
প্রথমার্ধেই ২-০ গোলে এগিয়ে গিয়েছিল মোহনবাগান। দ্বিতীয়ার্ধে নিশ্চিত গোলে অল্পের জন্য নিজের নাম লেখাতে পারলেন না পরিবর্ত হিসেবে নামা আজহারউদ্দিন। অরিজিৎ বাগুইয়ের ক্রসে আজহারউদ্দিনের হেড ৫৪ মিনিটে পোস্টে না লাগলে খেলার ফল ৩-০ হতে পারত। কিন্তু প্রথমার্ধের ২ গোলেই জয় ধরে রাখতে হল মোহনবাগানকে। ১০ ম্যাচে ২৬ পয়েন্ট নিয়ে চ্যাম্পিয়ন সবুজ-মেরুন।
দেখুন মোহনবাগান সমর্থকদের উচ্ছ্বাসের ভিডিও
এই নিয়ে ৩০ বার কলকাতা লিগ জিতল মোহনবাগান
১৯৩৯, ১৯৪৩, ১৯৪৪, ১৯৫১, ১৯৫৪, ১৯৫৫, ১৯৫৬, ১৯৫৯, ১৯৬০, ১৯৬২, ১৯৬৩, ১৯৬৪, ১৯৬৫, ১৯৬৯, ১৯৭৬, ১৯৭৮, ১৯৭৯, ১৯৮৩, ১৯৮৪, ১৯৮৬, ১৯৯০, ১৯৯২, ১৯৯৪, ১৯৯৭, ২০০১, ২০০৫, ২০০৭, ২০০৮, ২০০৯, ২০১৮
ম্যাচ শুরুর তিন মিনিটের মধ্যেই গোল করে মোহনবাগানকে এগিয়ে দিয়েছিলেন হেনরি কিসেকা। সেই অরিজিৎ বাগুইয়েরই ডিফেন্স চেরা শট ধরে গোলে ফিনিশ করেছিলেন হেনরি। এর পর দ্বিতীয় গোল এল ৪৪ মিনিটে। সেই হেনরিই ব্যবধান বাড়ালেন। এ বার ডিকার পাস থেকে। তার ঠিক আগের মুহূর্তে যে সুযোগ নষ্ট করলেন ডিকা তারই যেন খেসারত দিলেন গোলের বল সাজিয়ে দিয়ে। এরই মাঝে বার কয়েক আক্রমণে ওঠার চেষ্টা করল কাস্টমস। এই লিগে এই প্রথম হারের মুখ দেখল ক্যালকাটা কাস্টমস। মোহনবাগানের জন্য সহজ ম্যাচ ছিল না সে কারণে। সঙ্গে ছিল চ্যাম্পিয়নশিপের চাপ। কিন্তু ঠান্ডা মাথায় ম্যাচ বের করে নিয়ে গেলেন বাগান ফুটবলাররা।
ইস্টবেঙ্গলের হার , লিগ জয়ের সামনে মোহনবাগান
দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইস্টবেঙ্গল ১০ ম্যাচে ২০ পয়েন্ট। মঙ্গলবারই মহমেডানের কাছে হেরে চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে ছিটকে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। লিগে মোহনবাগানের বাকি আর মাত্র একটিই ম্যাচে। লিগের শেষ দিন মিনি ডার্বিতে মহমেডানের বিরুদ্ধে নামবে মোহনবাগান। তবে চ্যাম্পিয়নশিপের মালা গলায় পরেই শেষ ম্যাচ খেলবে। বাকি উৎসব না হয় সেই দিনের জন্যই থাক।