মৃত্যু শিলিগুড়ির সম্রাট দাসের, সামান্য ভূমিকম্প আর তাতেই প্রাণ বাঁচাতে হয়ে গেল বড় ক্ষতি

মৃত্যু শিলিগুড়ির সম্রাট দাসের,

জাস্ট দুনিয়া ব্যুরো: মৃত্যু শিলিগুড়ির সম্রাট দাসের । সামান্যই ভূমিকম্প। কলকাতার থেকে একটু বেশিই কেঁপেছিল শিলিগুড়ি। তার থেকে আরও বেশি অসম। কারণ উৎপত্তি স্থল সেই অসমই। ভয়ের আবহ তৈরি হয়েছিল। সকলেই  ছুটে বেরিয়ে আসছিলেন বাইরে। ভূমিকম্পের সময় এটাই তো রীতি। ২২ বছরের সম্রাট দাসও তো তাই করতে চেয়েছিলেন। দোতলার ঘরে বসেই টের পেয়েছিলেন। দৌড়ে নামতে যান সিঁড়ি দিয়ে। সঙ্গে ছিল তাঁর পোষ্য কুকুর হ্যাপি।

ভূমিকম্পের আতঙ্ক তো ছিলই। তাতেই দেহের ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন প্রথম বর্ষের এই ছাত্র। সিঁড়ির উপরের ধাপ থেকে সরাসরি এসে পড়েন নিচে। টাল সামলাতে পারেননি। মাথায় গুরুতর চোট পান সম্রাট। সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। কিন্তু তার আগেই মৃত্যু হয়েছে সম্রাটের। ডাক্তাররা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ছেলের হঠাৎ মৃত্যুতে শোকে পাথড় হয়ে গিয়েছেন সম্রাটের মা। বার বার বলছেন, কেন এত তাড়াহুড়ো করল ছেলেটা। সত্যিই তো এই ভূমিকম্পে কোনও হতাহতের খবর নেই। মানুষের জীবন তো দুরের কথা সম্পত্তিরও ক্ষতি হয়নি তেমন কারও। তা হলে এই ছেলেটা বেঘোরে প্রাণ দিল কেন এই ভাবে?

আসলে আতঙ্কেই সব ভুল হয়ে গেল। জীবন বাঁচাতে জীবনটাই চলে গেল শিলিগুড়ির শান্তিনগরের ছেলেটার। সম্রাট আর কলেজে যাবেন না। সম্রাট ছুটে এসে আর মাকে জড়িয়েও ধরবেন না। পাড়ার ফুটবল থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়বেন না। লিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাপ ৫.৩। তাও তার এপি সেন্টার অসমের কোকরাঝাড়। উত্তরবঙ্গে এমন ভূমিকম্প নতুন কিছু নয়। অত তীব্রতাও ছিল না।

বুধবার সকালে হঠাৎই কেঁপে উঠল শহর

একটা সময় উত্তরবঙ্গ ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল বলেই চিহ্ণিত ছিল। অতীতে ডুয়ার্সের বিভিন্ন অঞ্চলে সে কারণে পাঁকা বাড়ি বা দোতলা বাড়ি তৈরির অনুমতি ছিল না। সেখানে হয় কাঠের বাড়ি টিন বা অ্যাসবেসটসের ছাদ অথবা ব্যাড়ার দেওয়ালের উপর টিনের ছাদ। এ ভাবেই তৈরি হত বাড়ি। এখন পাঁকা বাড়ি তৈরি হলেও অনেক অঞ্চলে দোতলা পাকা বাড়ির অনুমতি নেই। কাঠের দোতলা তাই এই সব অঞ্চলে খুব জনপ্রিয়। কিন্তু শিলিগুড়ি শহর। প্রচুর পাকা বাড়ি, ফ্ল্যাটের আধিক্য শহর জুড়ে। কিন্তু এই সামান্য ভূমিকম্পে উত্তরবঙ্গের মানুষের তো এত ভয় পাওয়ার কথা ছিল না। যে দৌড়ে বেরতে গিয়ে প্রাণটাই চলে যাবে?

http://

অসমে কম্পনের মাত্রা অনেকটাই বেশি ছিল। তাতে ছড়িয়ে পড়ে ভয়ের আবহ। সকলেই বেরিয়ে আসে বাইরে। ঘরের ভিতরের জিনিস-পত্র পড়ে গিয়ে নষ্ট হয়েছে অনেকের। নিউবঙ্গায়গাও থেকে কোকরাঝাড়ের দুরত্ব ২৬ কিলোমিটার। নিউবঙ্গায়গাওয়ের এক বাসিন্দা জানাচ্ছিলেন, ‘‘এতটাই জোড়ে কাঁপছিল যে সবাই ভয় পেয়ে গিয়েছিল। ঘরের অনেক জিনিস পড়ে ভেঙে গিয়েছে। তাতে চোট লেগেছে অনেকের।’’ কিন্তু না, ভূমিকম্পে কোনও মৃত্যু হয়নি কোথাও। সম্রাট কি সত্যিই ভূমিকম্পের শিকার?