জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: হুগলীর চুঁচুড়ায় দশ ফুট বাই দশ ফুটের বাড়ি থেকে হিরো ইন্ডিয়ান সুপার লিগের গ্রহে পা রাখা পর্যন্ত যে পথ পেরিয়ে এসেছেন বাংলার সন্তোষ ট্রফি দলের অধিনায়ক মনতোষ চাকলাদার (Monotosh Chakladar), সেই পথ মোটেই সহজ ছিল না। বরং ছিল কাঁটায় ভরা। কিন্তু সেই কাঁটায় ভরা পথই প্রচুর লড়াই করে ও চোখভরা স্বপ্ন নিয়ে পেরিয়ে এসেছেন মনতোষ। দু’বারের হিরো আইএসএল চ্যাম্পিয়ন চেন্নাইন এফসি-র ডাক আসায় তাঁর সামনে সেই স্বপ্ন পূরণের সুযোগ চলেও এসেছে। এ বার আর পিছন দিকে নয়, শুধু সামনের দিকে তাকানোর পালা এই ডিফেন্ডারের।
কলকাতার ইউনাইটেড স্পোর্টস ক্লাবের যুব দলে নিজেকে তৈরি করার পরে গত চার বছরে খেলেছেন মহমেডান স্পোর্টিং, পাঠচক্র, গোকুলম এফসি, ইস্টবেঙ্গল, ভবানীপুর ক্লাব, বেঙ্গালুরু ইউনাইটেড ও মদন মহারাজ এফসি-র হয়ে। পিয়ারলেস এসসি-র কলকাতা লিগ চ্যাম্পিয়ন দলেরও সদস্য ছিলেন তিনি। হিরো আই লিগে চারটি ম্যাচে খেলেছেন গোকুলম কেরালা এফসি-র হয়ে। ইস্টবেঙ্গলের হয়ে একটি ম্যাচে তিন মিনিটের জন্য নামার সুযোগ হয় তাঁর। আই লিগের বাছাই পর্বে ও দ্বিতীয় ডিভিশনেও খেলেছেন।
সন্তোষ ট্রফিতে বাংলাকে ফাইনালে তোলার পরেই দক্ষিণ ভারতের ক্লাব থেকে ডাক আসে তাঁর কাছে। যদিও ফাইনালে বাংলা হেরে যায় কেরলের কাছে। কিন্তু মনতোষের পারফরম্যান্স অনেকেরই নজরে আসে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাঁকে চাকরিও দেয়। তার পরেই চেন্নাই থেকে আসে হিরো আইএসএলে খেলার প্রস্তাব।
এতদিন ধরে চালানো কঠিন লড়াইয়ের ফল পেয়ে খুশি ২৪ বছর বয়সি লেফট ব্যাক জানিয়েছেন, “আইএসএলে খেলা ছিল আমার স্বপ্ন। চেন্নাইনের মতো বড় ক্লাব থেকে ডাক পেয়ে তাই আমি অভিভূত”। sportskeeda.com কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কথাগুলি বলেন মনতোষ।
এত দিন যে পরিবেশে ফুটবল খেলে এসেছেন, হিরো আইএসএল গ্রহে যে ফুটবলের পরিবেশ তার চেয়ে অনেকটাই আলাদা, তা জানিয়ে বাংলার এই ফুটবলার এই সাক্ষাৎকারে বলেন, “এর আগে যে ক্লাবগুলোতে খেলেছে, সেখানে দেখেছি একজনই ফিজিও থাকে। এখানে এসে দেখলাম তিন-চারজন ফিজিও রয়েছে। দলে ভাল বিদেশি কোচেরা রয়েছেন, ম্যাসিওর আছে আর সৈয়দ সাবির পাশার মতো অভিজ্ঞ ভারতীয় কোচও রয়েছেন”।
জীবনযাত্রাতেও বদল এসেছে মনতোষের। বিশেষ করে খাওয়াদাওয়ায়। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমাদের ট্রেনারই দলের খেলোয়াড়দের ডায়েট ঠিক করে দেন। এখন আমি বুঝেছি, আমাদের ঠিক কী খাওয়া উচিত আর কী খাওয়া উচিত নয়। একজন পেশাদার ফুটবলারের যা যা দরকার, সেই সব রকম সুযোগ-সুবিধাই এই ক্লাবে রয়েছে। এর চেয়ে বেশি চাওয়ার কিছু থাকতে পারে না”।
আপাতত মাঠে নামার অপেক্ষায় রয়েছেন মনতোষ। দেশের তরুণ ডিফেন্ডাররা দেশের এক নম্বর ফুটবল লিগে যে ভাবে নিজেদের মেলে ধরেছেন, সেই পথই অনুসরণ করতে চান তিনি। এ ছাড়া লিগের তাবড় তাবড় ফরোয়ার্ডদের মোকাবিলা করার জন্যও মুখিয়ে রয়েছেন তিনি। বলেন, “হুগো বুমৌস, বার্থোলোমিউ ওগবেচে, আলভারো ভাস্কেজদের সঙ্গে দ্বৈরথের অপেক্ষায় আছি”।
নতুন কোচ থমাস ব্রদারিচের প্রশিক্ষণে ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে চেন্নাইন এফসি। গত মরশুমে তারা ২০ ম্যাচে ২০ পয়েন্ট পেয়ে লিগ তালিকায় আট নম্বরে থেকে শেষ করে। এ বার তার চেয়ে ভাল পারফরম্যান্স দেখানোর লক্ষ্যেই প্রাক মরশুম প্রস্তুতি শুরু করেছে তারা।
(তথ্য্য ও লেখা আইএসএল ওয়েবসাইট)
প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে
জাস্ট দুনিয়ার সঙ্গে গোটা বিশ্বকে রাখুন নিজের পকেটে। Follow Us On: Facebook, Twitter, Google