আইপিএল-এর ইডেনে Dhoni-রাজ, উধাও কেকেআর

তিনি এমএস ধোনি (MS Dhoni)। তিনি ক্যাপ্টেন কুল। এই পড়ন্ত সময়ের সীমান্তে দাঁড়িয়েও তাঁকে নিয়েই উত্তাল ক্রিকেটের নন্দনকানন যা বাংলার দাদাকেও বলে বলে ১০ গোল দেবে। বছরের পর বছর ধরে এমন ফ্যান ফলোয়িং কে কবে ধরে রাখতে পেরেছে তা খুঁজতে গেলে হাতে গোনা কয়েকটি নামই আসবে। সেই তালিকায় মারাদোনা, পেলের সঙ্গে হয়তো জুড়ে দেওয়া যেতে পারে ডন ব্র্যাডম্যান আর সচিন তেন্ডুলকরকে। হ্যাঁ, বিশেষ করে টিম গেমে ফ্যান ফলোয়িং মরসুমের সঙ্গে সঙ্গে বদলে যায়। কিন্তু ব্যতিক্রম থেকে যান কয়েকজন। তার মধ্যে অবশ্যই থেকে যাবেন ধোনি। ব্যাটে রান নেই, দল ইতিমধ্যেই ছিটকে গিয়েছে আইপিএল ২০২৫ থেকে। এই ম্যাচে হার-জিৎ কোনোটাই প্রভাব ফেলবে না চেন্নাই সুপার কিংসের উপর, বরং এই ম্যাচ কলকাতা নাইট রাইডার্সের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্লে-অফের দৌড়ে টিকে থাকতে হলে এই ম্যাচ জিততেই হবে। কোথায় কলকাতা এই সময় কেকেআর-এর জন্য গলা ফাটাবে, সেখানে ধর্মতলা থেকে ইডেনের সব গেট ভাসছে সাত নম্বরের হলুদ জার্সিতে।

প্রতিদিন অফিস ফেরত এই পথই ধরি। ধর্মতলা থেকে ইডেনের পাস কাটিয়ে বাবুঘাট। বুধবারটা একদম আলাদা। প্রায় পার্ক স্ট্রিটের মোর থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে হলুদ ঝড়। কিছুটা থমকে থমকেই এগিয়ে যাওয়া। যত এগিয়েছি তত হলুদ ঝড় যেন সাইক্লোনে পরিণত হয়েছে। হুড়মুড়িয়ে বিকোচ্ছে হলুদ সাত নম্বর জার্সি। ময়দান মার্কেট থেকে ইডেনগামী ফুটপাত ধরেও জার্সি, পতাকা নিয়ে বসা ফেরিওয়ালাদের কাছে একটাই দাবি, “ধোনির জার্সি চাই”। কেউ আজ খালি হাতে ফেরেননি বিক্রেতারা। একা মহেন্দ্র সিং ধোনিই তাঁদের আগামী কয়েকদিনের বেঁচে থাকার রসদ দিয়ে দিয়েছে।


ময়দান মার্কেটে ঢু দিয়ে ভাবলাম একটু বিক্রি বাট্টার খবর নেব। কিন্তু কোথায় কী, কথা বলারই সময় নেই। দরদামের চড়া স্বরে কান ঝালাপালা হওয়ার অবস্থা। তার মধ্যেই এক দোকানি জানালেন, কত বিক্রি হল এখনও হিসেব করার সুযোগ পাননি। একজন জানালেন, শুধু আজ নয় গত এক সপ্তাহ ধরেই বিক্রি শুরু হয়েছে ধোনির জার্সি। একজন ফেরিওয়ালা হাসি মুখে ফিরছেন বাড়ির পথে। জানালেন, ধোনির জার্সি সব শেষ। অনেকেরই চাহিদা পূরণ করতে পারেননি তিনি। তাঁর হাতে কয়েকটি কেকেআর জার্সি রয়েছে। বাবা-মায়ের হাত ধরে আসা একটি বাচ্চা ছেলে তার এক গালে লেখাচ্ছে ধোনি, অন্য গালে সাত। আসলে ধোনি সব প্রজন্মের, এটাই তার প্রমান।

ধর্মতলা থেকেই ঢুকে পড়তে হচ্ছে ইডেনগামী ব্যারিকেডের ভিতর। তার পর গেট নম্বর দেখে দেখে এগিয়ে যাওয়া। মুহুর্মুহু ধোনির নামের ধ্বনিতে সরগরম ইডেন চত্তর। এক একটা গেটে ৫০ জনের গায়ে ধোনির জার্সি থাকলে, এক জনের গায়ে রাসেল বা রিঙ্কু। হ্যাঁ, রেসিওটা এমনই। একটুও বাড়িয়ে বলছি না। আর বাইরের এই অভূতপূর্ব দৃশ্যই বলে দিচ্ছে অন্দরের কাহিনি। আজ ইডেনের গ্যালারি কেকেআর নয়, চেন্নাই তো নয়ই, আজ এই গ্যালারি ধ্বনিত হবে ধোনি ধোনি চিৎকারে।

আর হলও তাই। জাতীয় সঙ্গীতের সময় টুকু শুধু ছাড় দিয়েছিলেন ধোনি প্রেমীরা। তবে অনেকটাই ফাঁকা থেকে গেল গ্যালারি। এই নাকি টিকিটের হাহাকার। যতটুকু যা গ্যালারিতে সমর্থকরা হাজির হলেন তা ওই ঠান্ডা মাথার লোকটার জন্যই।

আজ হার-জিতের ঊর্ধ্বে উঠে ইডেনের রঙ শুধুই হলুদ। ধোনি যে সবাই হতে পারে না। ধোনি একটাই। সে তিনি, কেরিয়ারের চূড়ান্ত ফর্মে থাকুন বা কেরিয়ারের অন্তিম লগ্নে।

প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে

জাস্ট দুনিয়ার সঙ্গে গোটা বিশ্বকে রাখুন নিজের পকেটে। Follow Us On: FacebookTwitterGoogle