জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: বঙ্গ ফুটবলে প্রবাদ আছে, কলকাতা ডার্বির জয়ীরা পরের ম্যাচে জিততে পারে না। Mumbai city FC vs ATK Mohun Bagan ম্যাচে ঠিক হল সেটাই। শনিবার যতটা দাপট নিয়ে ডার্বি জিতেছিল এটিকে মোহনবাগান, গত বারের চ্যাম্পিয়ন মুম্বই সিটি এফসি এ দিন তার চেয়েও বেশি দাপটের সঙ্গে ৫-১ গোলে হারাল তাদের। এটিকে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে এটাই মুম্বই সিটি এফসি-র সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয়। বুধবার প্রথমার্ধে বিক্রম প্রতাপ সিংয়ের জোড়া গোল ও ইগর অ্যাঙ্গুলোর গোলে এগিয়ে যায় মুম্বই। দ্বিতীয়ার্ধে মুর্তাদা ফল ও বিপিন সিং ব্যবধান বাড়িয়ে নেন। ম্যাচ শেষের আধ ঘণ্টা আগে এটিকে মোহনবাগানকে একটি গোল এনে দেন পরিবর্ত হিসেবে নামা ডেভিড উইলিয়ামস। কিন্তু তার বেশি কিছুই করতে পারেননি সবুজ-মেরুন ফুটবলাররা।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই লাল কার্ড দেখে বেরিয়ে যেতে হয় এটিকে মোহনবাগানের ডিফেন্ডার দীপক টাঙরিকে। তার জেরে আরও দুর্বল হয়ে পড়ে গতবারের রানার্স-আপরা। মুম্বইয়ের মতো দাপুটে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ওই অবস্থা থেকে ম্যাচে ফেরা অসম্ভব হয়ে ওঠে সবুজ-মেরুন শিবিরের পক্ষে। এই জয়ের ফলে লিগ তালিকায় এটিকে মোহনবাগানকে চার নম্বরে নামিয়ে এক নম্বরে উঠে পড়ল মুম্বই সিটি এফসি। সেরা চার দলেরই পয়েন্ট সংখ্যা এখন ৬।
এ দিন এটিকে ৪-৪-২-এ দল সাজায় হুগো বুমৌস ও রয় কৃষ্ণাকে সামনে রেখে এবং যথারীতি মনবীর ও কোলাসোকে দুই উইংয়ে রেখে। কাউকো ও লেনিকে মাঝমাঠের দায়িত্ব দেন হাবাস। মুম্বই ৪-২-৩-১-এ দল সাজায় একেবারে সামনে ইগর অ্যাঙ্গুলোকে রেখে। তাঁর পিছনে বিপিন সিং, ক্যাসিও গ্যাব্রিয়েল ও বিক্রম প্রতাপ সিং। এ দিন সবুজ-মেরুন অধিনায়ক প্রীতম কোটালের ছিল শততম হিরো আইএসএল ম্যাচ। কিন্তু সেটা মনে রাখার মতো হল না।
ম্যাচ শুরুর চতুর্থ মিনিটে গতবারের ফাইনালের জয়সূচক গোলদাতা বিপিনের অনবদ্য ও মাপা ক্রস থেকে ডান দিক দিয়ে উঠে আসা বিক্রম প্রথম পোস্ট দিয়েই জালে বল জড়িয়ে দেন, যা প্রথম পোস্টে থেকেও আটকাতে পারেননি অমরিন্দর। তাঁর পায়ের নীচ দিয়ে বল গোলে ঢুকে যায়। বিপিনের ক্রসের পথে শুভাশিস থাকলেও তিনি তা ক্লিয়ার করতে না পারায় ‘আনমার্কড’ বিক্রমের কাছে বল চলে যায়। প্রথম ২০ মিনিট বিপক্ষের গোল এরিয়ায় রীতিমতো ঝড় তুলে দেয় মুম্বই সিটি এফসি। ডানদিকের উইংয়ে বিক্রম ও ও বাঁ দিক থেকে বিপিনের আক্রমণে বারবার সবুজ-মেরুন রক্ষণ ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে।
২৫ মিনিটের মাথায় ফের বাঁ দিক দিয়ে উঠে বিপক্ষের বক্সে মাপা ক্রস রাখেন বিপিন এবং সেই বলে পা লাগিয়ে প্রথমে অমরিন্দরের গায়ে মারেন বিক্রম। ফিরতি বল বিক্রমের শরীরে লেগে গোলে ঢুকে যায়। প্রথমার্ধে আরও একটি গোল হজম করতে হয় এটিকে মোহনবাগানকে। ৩৮ মিনিটের মাথায় বাঁ দিক থেকে হওয়া কর্নারের পর গোলের সামনে থেকে হেড করে বাঁ দিকে সম্পূর্ণ অরক্ষিত ইগর অ্যাঙ্গুলোকে বল সাজিয়ে দেন মুর্তাদা ফল। ফাঁকায় থাকা ‘গোলমেশিন’ অ্যাঙ্গুলো গোলে বল ঠেলতে বিন্দুমাত্র ভুল করেননি।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই দীপক টাঙরিকে লাল কার্ড দেখানোয় আরও বিপদে পড়ে যায় এটিকে মোহনবাগান এবং ৪৭ মিনিটের মাথায় মুর্তাদা ফলের গোল তাদের ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা পুরোপুরিই শেষ করে দেয়। আহমেদ জাহুর ফ্রিকিক থেকে পাওয়া বল বক্সের মধ্যে ঢুকে জালে জড়িয়ে দেন দীর্ঘদেহী ফল। এটিকে মোহনবাগান ফুটবলাররা বারবার অফসাইডের আবেদন জানালেও তাতে কর্ণপাত করেননি রেফারি। দশ জন হয়ে পড়ায় এটিকে মোহনবাগান রক্ষণ আরও দুর্বল হয়ে পড়ে দ্বিতীয়ার্ধে। যার ফল ৫২ মিনিটে বক্সের বাঁ দিকে বিপিন বল পেয়ে যখন সোজা গোলে শট নেন, তখন তাঁর কাছে দু’জন ডিফেন্ডার থেকেও কিছু করতে পারেননি। ৬০ মিনিটের মাথায় পরিবর্ত হিসেবে নামা ডেভিড উইলিয়ামস একটি গোল শোধ করেন।
এটিকে মোহনবাগান দল: অমরিন্দর সিং (গোল), প্রীতম কোটাল (অধি), কার্ল ম্যাকহিউ (আশুতোষ মেহতা), শুভাশিস বোস, দীপক টাঙরি, লেনি রড্রিগেজ (অভিষেক সূর্যবংশী), জনি কাউকো, হুগো বুমৌস (ডেভিড উইলিয়ামস), লিস্টন কোলাসো (প্রবীর দাস), মনবীর সিং (রবি রাণা), রয় কৃষ্ণা।
(লেখা আইএসএল ওয়েবসাইট থেকে)
প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে
(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)