জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: নটরাজন ভারতীয় ক্রিকেটের নতুন সেনসেশন। চার ওভার ৩০ রান তিন উইকেট। টি২০ অভিষেকে এটাই নটরাজনের পরিসংখ্যান। শুক্রবার অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দেশের জার্সিতে টি২০তে অভিষেক হয়ে গেল তাঁর। আর শুরুতেই বাজিমাত করলেন তিনি। টি২০তে তাঁর প্রথম শিকার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। এই সিরিজেই একদিনের ক্রিকেটেও অভিষেক হয়েছিল তাঁর। সেখানে তাঁর প্রথম শিকার ছিলেন মার্নাস লাবুশাগনে। আইপিএল-এ খেলেন সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের হয়ে। সেখানে তাঁর প্রথম শিকার অজিঙ্ক রাহানে। আসলে ভারত আরও একজন শিকারী বোলার পেয়ে গেল লিমিটেড ওভারের ক্রিকেটে।
খাতায় কলমে তাঁর টি২০ আন্তর্জাতিক প্রথম ম্যাচের হিসেব অনেকটা এরকম। ৪ ওভার, ৭টি ডট বল, ৩০ রান, ৩ উইকেট এবং ইকনমি রেট ৭.৫০। এক কথায় ৪-০-৩০-৩। ভারতের নতুন ইয়র্কার সেনসেশন। তাঁর বোলিংয়ে মুগ্ধ ভারতের প্রাক্তনরা।
থাঙ্গারাসু নটরাজন-এর উঠে আসা দুস্থ, গরীব পরিবার থেকে। দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারে থেকেই ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি। স্বপ্ন দেখেছিলেন দেশের জার্সি পরার। বাবা ছিলেন দিন মজুর। সামান্য খাওয়া জোগার করতে যাঁদের প্রতিদিন ভাবতে হত সেই ঘর থেকেই আজ ভারতীয় ক্রিকেটের মূলস্রোতে জায়গা করে নিয়েছেন এই ছেলে।
বাবার টাকায় সংসার চলত না তাই রাস্তায় মুরগি বেঁচতেন মা। পাঁচ ভাইবোনের সংসারে থেকেও ক্রিকেট নিয়ে ভাবতেন নটরাজন। না আছে জার্সি না জুতো তবুও তাঁর বোলিং তাক লাগিয়ে দিয়েছিল স্থানীয় ক্লাবগুলোকে। সেখানেই একটু একটু করে খেলার শুরু। ২০১৪তে প্রথম তামিলনাড়ুর হয়ে খেলেন তিনি। বদলাতে থাকে জীবন। আইপিএল জীবনে স্বচ্ছ্বলতা আনে। তাঁকে ক্রিকেটার হিসেবে তৈরি করে তুলেছিলেন জয়প্রকাশ নাট্টু। তাঁর নামের উল্কি রয়েছে নটরাজনের হাতে।
চিন্নাপ্পামপাত্তি থেকে অস্ট্রেলিয়ার উড়ানে বসার রাস্তাটা মোটেও সহজ ছিল না। গ্রামের এঁদো গলি থেকে ক্যানবেরার মাঠে চার ওভার বল করে তিন অস্ট্রেলিয়ানকে প্যাভেলিয়নে ফিরিয়েছেন তিনি। গ্রামের রাস্তায় টেনিস বলে ইয়র্কার প্র্যাকটিস এভাবে কাজে লেগে যাবে কে জানত।
তার আগেই আইপিএল-এর মঞ্চে নিজেকে পরিচিত করিয়ে ফেলেছিলেন নটরাজন। প্রথম বছরটা চোটের জন্য কিংস একাদশ পঞ্জাবের হয়ে তেমনভাবে সেরাটা দিতে পারেননি। কিন্তু সদ্য শেষ হওয়া আইপিএল-এ সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের হয়ে সেরাটা দিয়ে ভারতীয় দলে জায়গা করে নেওয়া।
তবে এটা সবে শুরু, এখনও অনেকটা পথ চলা বাকি। বাকি অনেক ওঠাপড়া, লড়াই। দৈন্যতাকে জয় করার পর মাটিতে পা রেখে সাফল্যকে উপভোগ করাটাও একটা বড় চ্যালেঞ্জ তাঁর সামনে সঙ্গে নিজের সেরাটা ধারাবাহিকভাবে দিয়ে যাওয়া।
(খেলার জগতের আরও খবর জানতে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে)
(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)