জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: এশিয়ান কাপ ২০২৩-এর মূলপর্বে ওঠার পর স্বাভাবিক ভাবেই দেশের ফুটবল মহলে খুশির হাওয়া। উচ্ছ্বসিত ভারতীয় ফুটবল সংসারও। ভারত অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী (Sunil Chhetri Interview)ও এই ব্যাপারে একমত। দলের তরুণদের নিয়ে তিনি যেমন উচ্ছ্বসিত, তেমনই সিনিয়র ও জুনিয়রের সঠিক মিশ্রণেরও প্রশংসা করেন তিনি। মঙ্গলবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ভরা গ্যালারির সামনে আক্রমণের ঝড় বইয়ে দেন সুনীল ছেত্রীরা। এই তরুণ ব্রিগেডকে নিয়ে সুনীলের এমন অভিযান এক বছর পরেও দেখা যাবে কি না, তা সময়ই বলবে। তবে ভারতের এই দাপুটে সাফল্য যে এ দেশের ফুটবলের ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নেবে, এই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
আন্তর্জাতিক গোলের সংখ্যার দিক থেকে কিংবদন্তি ফেরেঙ্ক পুসকাসকে ধরে ফেললেন আপনি। আর একটি গোল করলেই তাঁকে ছাড়িয়ে যাবেন। আপনার কেমন লাগছে?
তালিকাটা দেখলে ভাল লাগছে। তবে আমি এসব রেকর্ড নিয়ে বেশি ভাবি না। আমি জানি আর বেশিদিন দেশের হয়ে খেলার সুযোগ পাব না। তাই খেলতে নেমে যতটা পারি মুহূর্তগুলো উপভোগ করে নিই। দৌড়নো, ঝাঁপ দেওয়া, এ সবই করি। কারণ, জানি যে, এ সব বেশিদিন করতে পারব না। আর ভারতের হয়ে খেলা সম্ভবত আমার জীবনের সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য আমি সন্মানিত।
শেষ তিন ম্যাচে অসাধারণ খেললেন আপনারা। দারুণ ফল হয়েছে। মনে হচ্ছে না যে, এশিয়ান কাপের মূলপর্ব কাল থেকে শুরু হলেই ভাল হত?
সত্যিই, ঘরের মাঠে এ রকম ফর্মে থাকাটা দারুন ব্যাপার। সমর্থকেরা যে ভাবে ঝাঁকে ঝাঁকে আমাদের খেলা দেখতে এসেছেন এবং আমাদের জন্য গলা ফাটিয়েছেন, তাতে মনে হচ্ছে ম্যাচগুলো এখানে হলেই ভাল হত। আমি খুব তৃপ্ত। যদিও এ কথা আমি সাধারণত বলি না। তবে সত্যিই দলের পারফরম্যান্স দেখে আমি খুব তৃপ্তি পেয়েছি। ঘরের মাঠে খেলাগুলো হবে জেনে আমরা একটা লক্ষ্য স্থীর করেছিলাম। সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে পেরে আমরা খুবই খুশি। তিন ম্যাচে ন’পয়েন্ট পাওয়াটা মোটেই সহজ ব্যাপার নয়। প্রথম ম্যাচে কম্বোডিয়াকে হারাতে না পারলে শেষ দুটো ম্যাচ জেতা বেশ কঠিন হত। তাই খুবই ভাল লাগছে।
এত বছরের ফুটবলজীবনে এটাই কি মূলপর্বে ওঠার সবচেয়ে মধুর স্মৃতি। অন্যগুলো কেমন ছিল?
এটাই বোধহয় আমার সেরা সময়। তাই ভাল লাগছে। গতবারেরটা তো অতীত। এ বার আমরা সবাই খুব পরিশ্রম করতে চেয়েছিলাম। এর পরের বড় টুর্নামেন্টগুলোতে আমি থাকব কি না, সেটা বড় কথা নয়। ভারতকে থাকতেই হবে। আমি বরাবরই বলে এসেছি, প্রতি এশিয়ান কাপে ভারতকে অংশ নিতে হবে। এশিয়ার সেরা দেশগুলোর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়তে হবে। তা হলেই বোঝা যাবে কতটা এগোলাম আমরা আর এখনও কতটা বাকি আছে এগোতে। এশিয়া কাপ ছাড়াও এশিয়ার বড় দলগুলোর সঙ্গে আমরা ফ্রেন্ডলি খেলতেই পারি। এখন সব ঠিকই আছে। আমরা যেটা করতে চেয়েছিলাম, তা করতে পেরেছি। এ বার আমাদের আরও ভাল প্রস্তুতি নিতে হবে যাতে গত বারের এশিয়ান কাপের চেয়েও ভাল খেলতে পারি।
এই দলের ছেলেরা নিজেদের মধ্যে যে আত্মবিশ্বাস গড়ে তুলেছে, তা অসাধারণ। মাঠে নেমে কি সেটা টের পেয়েছেন?
হ্যাঁ, সত্যিই ওরা অসাধারণ। ওদের বাচ্চা বললে হয়তো ওরা আমাকে মারতে আসবে, তবে ওরা অসাধারণ। তবে আমাদের দলে মিশ্রণটা আছে, সেটা খুবই ভাল। গুরপ্রীত, সন্দেশ, রাহুল, খাবরাদের সঙ্গে তরুণদের যে ভারসাম্য তৈরি হয়েছে দলে, সেটা খুবই ভাল। খারাপ অর্থে বলছি না, আমাদের এই ছেলেগুলো বেশ বেপরোয়া। মাঠে গিয়ে শুধু নিজেদের খেলাটা খেলতে চায়। লিস্টন, সুরেশ, আকাশ, রোশনরা রয়েছে আমাদের দলে। আকাশ আর রোশন তো দুরন্ত। অনেক তরুণ খেলোয়াড় উঠে আসছে। অনেকে চলেও যাচ্ছে। আমি সেদিন বলছিলাম, অনুশীলনে ইশানের পারফরম্যান্স দারুন। ম্যাচে নেমে ও কী করল দেখুন। ওরকম বৃষ্টির আবহাওয়ার মধ্যে মাত্র দশ মিনিটে এত কিছু করা সোজা নয়। কিন্তু জানতাম, ইশান, সহালরা গোল করতে পারে। কারণ, ট্রেনিংয়ে ওরা প্রায়ই গোল করে। খুব ভাল লাগে, যখন দেখি এত তরুণ প্রতিভা দলে রয়েছে এবং প্রত্যেকে প্রথম এগারোয় ঢোকার জন্য কোচের দরজায় কড়া নাড়ছে।
(তথ্য্য ও লেখা আইএসএল ওয়েবসাইট)
প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে
জাস্ট দুনিয়ার সঙ্গে গোটা বিশ্বকে রাখুন নিজের পকেটে। Follow Us On: Facebook, Twitter, Google