জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: নদীর নিচ দিয়ে ছুটে যাবে মেট্রো রেল। বিশ্বকে প্রথম এই স্বপ্ন দেখিয়েছিল লন্ডন। আর ভারতকে এই উপহার দিতে চলেছে কলকাতা। তবে একটা দীর্ঘ লড়াই রয়েছে এই উদ্যোগের পিছনে। লন্ডনে টেমস নদীর নিচে টানেল তৈরি হয়েছিল ১৮৪৩-এ। এটিই বিশ্বের সব থেকে পুরনো জলের নিচের টানেল। প্রাথমিকভাবে এই টানেল ব্যবহার করা হত ঘোড়ার গাড়ি করে জিনিসপত্র আনা-নেওয়ার জন্য। পরে এটিকে রেলওয়ে টানেল করা হয়। এর পর থেকে অনেকেই উদ্যোগ নিয়েছে জলের নিচে টানেল করার। যার ফলে যানজট অনেকটাই কমে যায়। আর এখন লন্ডনের অন্যতম দর্শনীয় স্থানের মধ্যে একটি হল জলের নিচের ট্রেন পথ।
কলকাতাও সেই তালিকায় নাম লিখিয়ে ফেলল। ২০২৩-এর ১২ এপ্রিল প্রথম হুগলি নদীর নিচ দিয়ে চলল ট্রেন। তবে এই পথ এখনও সাধারণের জন্য খুলতে সময় লাগবে। কলকাতা শহরের অনেক দ্রষ্টব্যের মধ্যে যে জুড়ে যাবে নদীর নিচের মেট্রো পরিষেবা তা নিয়ে কোনও সংশয় নেই। আপাতত আগামী সাত মাস ধরে চলবে ট্রায়াল রান। সাধারণের জন্য মেট্রোর পথ খুলে দেওয়ার আগে খতিয়ে দেখা হবে নিরাপত্তা।
বুধবার এসপ্ল্যানেড থেকে মেট্রোর দু’টি রেককে নিয়ে যাওয়া হল হাওড়া ময়দান পর্যন্ত। জলের নিচে হাওড়া ময়দান স্টেশনের গভীরতা ৩৩ মিটার। হাওড়াই হতে চলেছে দেশের গভীরতম মেট্রো স্টেশন। ভারতীয় মেট্রো রেলের ইতিহাসে লেখা থাকবে এসপ্ল্যানেড স্টেশনের নামও। কারণ দেশের প্রথম মেট্রো রেল ছেড়েছিল এই স্টেশন থেকেই। আবার এখান থেকেই প্রথম ছাড়ল আন্ডার ওয়াটার ট্রেন।
এদিন নদীর নিচ দিয়ে যে ট্রেন এসপ্ল্যানেড থেকে হাওড়া গেল তাতে ছিলেন মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষের লোক জনই। এদিন সকাল ১১.৫২ মিনিটে প্রথম রেকটি হাওড়া ময়দানে পৌঁছয়। পিছন পিছনই পৌঁছয় দ্বিতীয় রেকটিও। দ্রুত শুরু হবে ট্রায়াল রান। এদিন ছিল তারই প্রথম পদক্ষেপ। হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত রাস্তা ৪.৮ কিলোমিটার যার মধ্যে নদীর নিচের ৫২০ মিটার রাস্তা ৪৫ সেকেন্ডের মধ্যে পার হবে ট্রেন। এই রাস্তা তৈরি হয়েছে জলস্তর থেকে ৩২ মিটার গভীরে।
ক্রমশ কলকাতা শহর থেকে শহরতলী জুড়ে ফেলা হচ্ছে মেট্রো রেল দিয়ে। যার ফলে গতি বাড়বে শহরের। দ্রুত পৌঁছে যাওয়া যাবে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায়। ইতিমধ্যেই শিয়ালদহ থেকে মেট্রো পরিষেবা চালু হয়ে গিয়েছে সেক্টর ফাইভ পর্যন্ত। এই পথ জুড়ে যাবে এসপ্ল্যানেডের সঙ্গে। বৌবাজারে মেট্রো টানেলের কাজ চলার সময় পুরনো বাড়ি ধসে পড়ার কারণে এই পথের কাজ বন্ধ রয়েছে। যার প্রভাব সাময়িকভাবে পড়েছিল নদীর নিচের মেট্রো রেলের কাজেও। শেষ পর্যন্ত সেই কাজ শেষ হল বলা যায়। এবার অপেক্ষা শুধু সাধারণের জন্য এই পরিষেবা খুলে দেওয়ার। মনে করা হচ্ছে চলতি বছরের শেষের দিকে খুলে যেতে পারে এসপ্ল্যানেড-হাওড়া ময়দান জলের নিচের মেট্রো পরিষেবা। যা বাংলা তথা ভারতীয় রেলের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত।
প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে