জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: বাড়িতে ছোট বাচ্চা রয়েছে আর সে কারণে বাবা-মা-র বেড়ানো বন্ধ। কতদিন আর না বেড়িয়ে থাকা যায়। একটা সময়ের পর হাসফাঁস লাগে। গৃহবন্দি দশা শুরু হয় অন্তঃসত্ত্বা হওয়া থেকেই। তার পর সন্তানের জন্ম। পরিবারের গুরুজনের সাধারণত ৫ বছরের আগে বাচ্চাকে নিয়ে খুব দূরে বেড়াতে যেতে বারণই করে থাকেন। তাহলে ভাবতে পারছেন, কম করে ৬ বছরের জন্য গৃহবন্দি হয়ে যেতে হবে। তবে এই যুগে দাঁড়িয়ে সেটা সম্ভব নয়। এখন যাতায়াত হোক বা থাকা, খাওয়া সব জায়গায় সবরকমের ব্যবস্থা থাকে। তাই বাচ্চা নিয়ে বেরিয়ে পড়তে কোনও সমস্যা নেই (Travelling With Kids)। তার আগে মনে রাখতে হবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
জায়গা নির্বাচন— ছোট বাচ্চা নিয়ে কোথা বেড়াতে গেলে জায়গা নির্বাচন খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সাধারণত ভিড়হীন, ফাঁকা, শহর থেকে দূরে, গ্রাম্য পরিবেশে ছুটি কাটাতে পছন্দ করি। কিন্তু এক্ষেত্রে তেমনটা করবেন না। বরম এমন জায়গায় বেড়াতে যান যেটা প্রাকৃতিকভাবে সুন্দর আবার শহর। হাতের কাছেই যেন ডাক্তার-সহ সব কিছু পাওয়া যায়। কারণ বাচ্চার কখনও কী সমস্যা হবে বা দরকার হবে সেটা আগে থেকে সব সময় বোঝা সম্ভব নয়। এ ছাড়া, ৫-৭ দিনের ট্রিপ হলে সব জিনিস প্যাক করে লাগেজ বাড়ানোর থেকে যেখানে যাবেন সেখানে পৌঁছে কিনে নেওয়াটা সহজ। তাই জায়গা বাছুন এভাবে।
যাতায়াত— যাতে ট্র্যাভেলিংয়ের সময় কম লাগে এমন যান নির্বাচন করুন। সেক্ষেত্রে বিমানর টিকিট আগে থেকে কাটলে তা কখনও কখনও ট্রেনের এসি বেডের থেকে কম ভাড়ায় পাওয়া যায়। এবং সময়ও অনেক কম লাগে। এছাড়া দেখবেন ট্রেন বা বিমান থেকে নেমে যেন খুব বেশি বাই রোড জার্নি করতে না হয়। সেটাও বাচ্চার জন্য খুব বেশি ধকলের। রোড ট্রিপে বাচ্চাদের বমি হওয়ার একটা সম্ভাবনা থাকে। সে কারণেসেই পথটা যেন ছোট হয়। এমন জায়গা নির্বাচন করবেন যাতে খুব বেশি গাড়ি চড়তে না হয়।
হোটেল— হোটেল নির্বাচনও এক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ। সবার আগে দেখতে হবে হোটেলের হাইজিন। বিশেষ করে কোভিড পরিস্থিতিতে তো বটেই। সঙ্গে যখন বাচ্চা রয়েছে তখন তার গুরুত্ব ১০০ শতাংশ বেড়ে যায়। এছাড়া এমন হোটেল বা হোটেলের ঘর নির্বাচন করবেন যেটা খোলামেলা, হাওয়া, রোদ ঘরে ঢোকে। যাতে আবহাওয়ার পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে সুবিধে হবে। সঙ্গে মাথায় রাখবেন বাচ্চা নিয়ে খুব বেশি সাইটসিন, টোটো করে ঘোরা কখনওই সম্ভব হবে না। সে কারণে হোটেলের ঘর থেকেই যেন প্রকৃতির শোভা উপভোগ করতে পারেন না হলে বোর হয়ে গেলে ঘোরার পরিকল্পনাটাই ভেস্তে যাবে।
সাইটসিন— যত কম রাখবেন তত ভাল। প্রথমেই বললাম বাই রোড বাচ্চাদের জার্নিতে অনেক বেশি কষ্ট হয়। সেটা যত কম করবেন তত ভাল। তাই সাইট সিনের তালিকাটা একদমই ছোট রাখতে হবে। পায়ে হেঁটে যা যা দেখা যায় সেগুলোই দেখুন। বা ১ ঘণ্টার মধ্যে যে সব জায়গা রয়েছে সেগুলো দেখে নিন বিশ্রাম নিয়ে নিয়ে। আরও একটা উপায় অবশ্য রয়েছে। পরিবারের বড়রা সঙ্গে থাকলে যেমন দিদিমা, ঠাকুমারা থাকলে তাঁদের কাছে হোটেলে বাচ্চাকে রেখে ঘুরতে পারেন তবে যে বাচ্চা ব্রেস্টফিড করে তাঁকে বেশিক্ষণ একা রেখে যাওয়াটাও মুশকিল। তাই ঘরে বসেই প্রকৃতি উপভোগ করুন।
বাচ্চার খাবার— বাইরে বাচ্চা খেতে পারবে না। তাই বিশেষ করে যখন ট্র্যাভেল করবেন তখন বাচ্চার সারাদিন-রাতের খাবার প্যাক করে সঙ্গে রাখতে হবে। সঙ্গে গরম জল রাখতে হবে ফ্লাক্সে। এমন খাবার রাখতে হবে যাতে তা নষ্ট না হয়ে যায়। এ ছাড়া বাচ্চারা যা খেতে পছন্দ করে কিন্তু সাধারণত স্বাস্থ্যের কথা ভেবে আমরা দিই না ট্র্যাভেল করার সময় সেগুলোও সঙ্গে রাখতে হবে কারণ বাচ্চাদের বায়না থামানোর এর থেকে ভাল উপায় আর কিছু হতে পারে না। সঙ্গে রাখুন চিপস, চকোলেট, ক্যান্ডি, কুকিজের মতো ইন্টারেস্টিং খাবার।
বাচ্চার স্ট্রলার— বেড়াতে গিয়ে আমরা অনেক সময় শুধুই হাঁটতে ভালবাসি। না চাইলেও হেঁটে অনেকটাই ঘুরতে হয়। সেই অবস্থায় যদি সব সময় বাচ্চাকে কোলে রাখতে হয় তাহলে সেটা খুবই ক্লান্তিকর। সে কারণে সঙ্গে রাখুন স্ট্রলার। তাহলে খুব সহজেই বাচ্চাকে নিয়ে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় হেঁটে পৌঁছতে পারবেন। আর বাচ্চাও তাঁর পছন্দের স্ট্রলার পেয়ে খুশি থাকবে। সঙ্গে বাচ্চাদের স্ট্রলার এমন একটি বিকল্প যার মধ্যে বাচ্চার প্রয়োজনীয় জিনিসও স্টোর করা যায়। ভারী ব্যাগও ক্যারি করতে হবে না। কিছু খেলনাও সঙ্গে রাখুন।
প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে
জাস্ট দুনিয়ার সঙ্গে গোটা বিশ্বকে রাখুন নিজের পকেটে। Follow Us On: Facebook, Twitter, Google