জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: বাংলাদেশে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ রোহিঙ্গা শিবির, এখনও পর্যন্ত তিন শিশুসহ মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের। প্রবল বৃষ্টি ক্ষতিগ্রস্থ গোটা দেশ। যার প্রভাব ভীষনভাবে পড়েছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের উপর। প্রবঢ় বৃষ্টিতে ভূমি ধস ও হঠাৎ আশা জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে রোহিঙ্গা ক্যাম্প। শুক্রবার ইউএন ও সরকারি সূত্রে এই তথ্য জানানো হয়েছে। জানা গিয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশে হাজারের উপর মুসলিম রোহিঙ্গা এই বন্যায় ঘরহারা হয়েছে। ৬ জন রোহিঙ্গা ছাড়াও এই বন্যায় ১৫ জন বাংলাদেশি নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। কক্স বাজারে ২ লাখের উপর মানুষ বন্য্যায় আটকে রয়েছে, এমনটাই জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মামুনুর রশিদ।
কক্স বাজারের বর্ডার জেলায় ঘিঞ্জি শিবিরের মধ্যেই থাকে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা। বিশ্বের সব থেকে বড় উদ্বাস্তু শিবিরও বলা হয়ে থাকে এই এলাকাকে। ২০১৭-তে মায়ানমার ছেড়ে বাংলাদেশের এই অঞ্চলে আশ্রয় নিয়েছিল তারা। সেই থেকে এটিই তাদের ঘাঁটি। তবে এই বন্যা অনেকটাই তছনছ করে দিয়েছে তাদের ঠুনকো বাসস্থানকে।
কক্স বাজার পুরোটাই প্রায় সমুদ্র, পাহাড়ে ঘেরা। অনেকটাই পাহাড় লাগোয়া অংশে এই উদ্বাস্তু শিবির। পাহাড়ের গা দিয়েই তৈরি হয়েছে তাদের বাঁশ ও প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি ঘর। বৃষ্টিতে পাহাড়ে ধস নামার কারণে ভেঙে গিয়েছে পাহাড়ের গায়ে থাকা ঘর। অনেক ঘর চলে গিয়েছে ধসের সঙ্গে কিছু জলের তলায়। এমন বন্যা এর আগে দেখেনি এই রোহিঙ্গা শিবিরে বসবাসকারীরা।
সেই শিবিরে থাকা রোকেয়া বেগম জানিয়েছেন, তাঁর কাছে এটা একটা ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা। তিনি বলেন, ‘‘এরকম বন্যা এর আঅগে কখনও দেখিনি। গত চার বছর ধরে এই শিবিরে রয়েছি। যখন জল ঢুকতে শুরু করে তখন পরিবারের কেউ এখানে ছিল না। আমি একা ছিলাম। কিন্তু আমি আমার জিনিসপত্র নিয়ে নিরাপদ স্থানে পৌঁছে যেতে পেরেছিলান। এখন আমি অন্য একটি পরিবারের সঙ্গে রয়েছি।’’
ইউএন রিফিউজি এজেন্সি জানিয়েছে, ২১ হাজারের বেশি উদ্বাস্তু ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এই বন্যায়। ৪ হাজারের মতো উদ্বাস্তু শেল্টার নষ্ট হয়েছে। ১৩ হাজারের বেশি মানুষ বাধ্য হয়েছে অন্যত্র সরে যেতে। নষ্ট হয়েছে হেলথ ক্লিনিকস, টয়লেটসহ আরও অনেক বিশেষ প্রয়োজনীয় জায়গা। উদ্বাস্তুদের কাছে পৌঁছনোও কঠিন হচ্ছে কারণ ভূমি ধসে ভেঙে গিয়েছে রাস্তা, ব্রিজ।
গত মার্চেই এই উদ্বাস্তু শিবিরে বড় আগুন লাগে। তার ধাক্কা এখনও সামলে উঠতে পারেনি সেখানে বসবাসকারীরা। তার উপর এই বন্যা। যা সব কিছু কেড়ে নিল তাদের থেকে। আবার নতুন করে শুরহু করতে হবে। তবে এখনই তার কোনও সম্ভাবনা নেই। কারণ পুরো এলাকা ঢেকে রয়েছে কাদা, মাটিতে। অনেক অংশ এখমনও জলের তলায়। ভূমি ধস ও বন্যায় সব ঘর ঢাকা পড়ে গিয়েছে।
(প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে)
(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)