জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: কান্দাহারে ভারতীয় দূতাবাস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দূতাবাস কর্মীদের বেশিরভাগকেই উড়িয়ে আনা হয়েছে সে দেশ থেকে। তবুও ভরসা নেই তালিবানদের। বুধবার সেই বন্ধ ভারতীয় দবতাবাসের অফিসে হানা দিল তালিবানরা। সেখান থেকে বেশ কিছু ডকুমেন্ট ও দাঁড়িয়ে থাকার গাড়ি নিয়ে যায় তারা। তার মানে, তালিবানরা যে শান্তির মাধ্যমে দেশ দখলের কথা এতদিন বলছিল সেটা সত্য নয়। বরং তাদের এই পদক্ষেপ চিন্তা বাড়িয়েছে ভারতের। সূত্রের খবর বুধবার কান্দাহার ও হেরাতের ভারতীয় দূতাবাসে হানা দেয় তালিবানরা। কান্দাহারে তারা আলামারি খুলে খুলে দেখে পেপারের জন্য বলে জানা গিয়েছে।
জানা গিয়েছে, কান্দাহারে ভারতীয় দূতাবাস-এ ঢুকে সব ডকুমেন্ট তছনছ করেছে তারা। এবং এটা প্রত্যাশিত ছিল বলেই জানানো হয়েছে। তবে চিন্তা বাড়াচ্ছে তালিবানদের এই পদক্ষেপ। এখনও সে দেশে বেশ কিছু ভারতীয় রয়ে গিয়েছে। ধিরে ধিরে উদ্ধার করা হচ্ছে কিন্তু যতক্ষণ না সবাইকে উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে ততক্ষণ এটা চিন্তার। কাবুল দখলের পর থেকেই তালিবানরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে খুঁজে বের করছিল সরকারি নিরাপত্তা বিষয় দফতরের কর্মীদের সঙ্গে রাজ্য স্তররের ইন্টিলিজেন্ট এজেন্সিদের কর্মরতদের।
কাবুল ছাড়া আফগানিস্তান জুড়ে ভারতের চারটি দূতাবাস ছিল। কান্দাহারা ও হেরাত ছাড়াও ভারতীয় দূতাবাস রয়েছে জালালাবাদ ও মাজার-ই-শরিফে। যেটা তালিবান দখল নেওয়ার একদিন আগেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। যদিও কাবুলের দূতাবাস এখনও সরকারিভাবে বন্ধ করা হয়নি। তবে সেখানে কোনও ভারতীয় নেই। স্থানীয়দের সাহায্যে তা চালানো হচ্ছে। এএফপির খবর তালিবানরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে আমেরিকা ও ন্যাটো বাহিনীতে কর্মরত ছিলেন এমন মানুষদেরও খুঁজছে।
এই সপ্তাহেই বায়ূসেনার সি-১৭ দুটো বিমান আফগানিস্তান থেকে উদ্ধার করেছে দূতাবাসকর্মীসব উচ্চপদস্থ কর্মীদের। সঙ্গে সাধারণ ভারতীয়দের উদ্ধার করা হয়েছে যাঁরা সেখানে কাজ করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু এখনও কিছু মানুষ কাবুলে রয়ে গিয়েছে। সূত্রের তরফে এও বলা হচ্ছে তালিবানরা চায়নি ভারত কাবুল থেকে তাদের দূতাবাসকর্মীদের সরিয়ে নিক। এমন বার্তাও নাকি তালিবানদের তরফে ভায়া দেওয়া হয়েছিল।
এদিকে ডিডব্লু (ডয়েশ ওয়েল) সাংবাদিকের খোঁজে গিয়ে তাঁর এক আত্মীয়কে খুন করল তালিবানরা। জার্মানির এই সংবাদ মাধ্যমে কাজ করা সাংবাদিকের খোঁজে বাড়ি বাড়ি হানা দেয় তারা। তখনই তাঁর আত্মীয়ের উপর হামলা চালায় তালিবানরা। একজন বেঁচে পালাতে পারলেও একজন পারেননি। সংস্থার হেড এই ঘটনার নিন্দা করেছেন। এর থেকে প্রমাণ হচ্ছে সে দেশে সংবাদ মাধ্যমকেও কাজ করতে দেওয়া হবে না। সাংবাদিকদের জন্য খুবই আতঙ্কের পরিবেশ। তারা বিশেষ বিশেষ পেশার লোকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কোঁজ চালাচ্ছে। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে আফগানিস্তানের বিভিন্ন প্রদেশে আরও তিন জন ডি ডব্লু সাংবাদিকের বাড়িতে তারা হানা দিয়েছে।
জার্মানির সব সংবাদ মাধ্যমের তরফে ইতিমধ্যেই সরকারের কাছে আর্জি জানানো হয়েছে, যেন দ্রুত তাঁদের সাংবাদিকদের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখা হয়। কাবুলের দখল নেওয়ার পর ঘটা করে সাংবাদিক সম্মেলন করে তালিবানরা জানিয়েছে, তাঁরা সংবাদ মাধ্যমের কাজে স্বাধীনতা দেবে। মহিলাদের অধিকারও দেওয়ার কথা জানিয়েছিল তারা। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে তেমন কিছুই হচ্ছে না। বরং যে তালিবান ২০ বছর আগে ছিল সেই তালিবানকেই আবার দেখা যাচ্ছে। যা সর্বত্র আতঙ্ক বাড়াচ্ছে।
প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে
(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)