জাস্ট দুনিয়া ব্যুরো: বাংলা কমিকসের স্রষ্টা Narayan Debnath শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছি ৯৬ বছর। বয়সজনিত সমস্যার পাশাপাশি নানারকম সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। গত বছর ২৪ ডিসেম্বর থেকে ভর্তি ছিলেন হাসপাতালে। ক্রমশ খারাপ হচ্ছিল তাঁর শরীর। তাঁর চিকিৎসায় তৈরি করা হয়েছিল ৬ সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি। নেতৃত্বে ছিলেন ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট বিশেষজ্ঞ সমরজিৎ নস্কর। তাদের অধিনেই চলছিল নারায়ণ দেবনাথের চিকিৎসা। হাসপাতালের বেডে শুয়েই পেয়েছিলেন পদ্মশ্রী সম্মান। সেই সম্মান সেখানে তাঁর হাতে তুলে দেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ রায়। শেষবেলায় এই সম্মান পেয়ে খুশি ছিলেন।
এর পর শরীর আরও খারাপ হয়। শনিবার রাতে তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়েছেন চিকিৎসকরা। কিন্তু মঙ্গলবার সকাল ১০.১৫ নাগাদ মৃত্যু হয় তাঁর। রক্তচাপ ওঠানামা, শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা দেখা দিয়েছিল এদিন সকালে। ডাক্তাররা বুঝেই গিয়েছিলেন। তাঁর চিকিৎসার সমস্ত দায়িত্ব নিয়েছিল রাজ্য সরকার। গত কয়েক বছরে বার বার অসুস্থ হয়েছে। চিকিৎসার পর বাড়িও ফিরে গিয়েছেন। কিন্তু এবার আর ফেরা হল না।
১৯২৫ সালে হাওড়ার শিবপুরে জন্মগ্রহন করেছিলেন নারায়ণ দেবনাথ। ছোটবেলা থেকেই পারিবারিক কারণে শিল্পের প্রতি টান তৈরি হয় তাঁর। বাড়িতে তৈরি হত গয়নার নকশা। সেই কাজে হাত লাগাতেন তিনিও। এর পর সেই টানেই ভর্তি হন আর্ট কলেজে। কিন্তু তখন দেশের অবস্থা ঠিক ছিল না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে তিনি তাঁর পড়া শেষ কতে পারেননি। তার পর বেশ কিছু বিজ্ঞাপন সংস্থায় কাজ করেন। সেখান থেকেই ক্রমশ মনের কোণায় জন্ম নিতে শুরু করে হাঁদা ভোঁদা, বাটুল দি গ্রেট, নন্টে ফন্টেরা।
ছয়ের দশকে শুকতারায় যখন হাঁদা ভোঁদা-র জন্ম হয় তখনই জন্ম হয় নতুন এক নারায়ণ দেবনাথের। তার পর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। তার কিছুদিন পরেই মানুষের মন তথা ছোটদের জীবনে হাজির হয় বাঁটুল দি গ্রেট। তার পর নন্টে ফন্টে, বাহাদুর বেড়াল তাঁকে নিয়ে যায় জনপ্রিয়তার শিখরে। এর পরও তঁর তৈরি নানান চরিত্র এসেছে বাংলার পাঠকদের কাছে। তবে এই তিন কাহিনীর জনপ্রিয়তাকে তার কোনওটাই ছাপিয়ে যেতে পারেনি। তিনি আর নতুন কিছু সষ্টি করবেন না কিন্তু যুগের পর যুগ ধরে বাঙালি বেড়ে ওঠায় থেকে যাবে তাঁর সৃষ্টি।
প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে
(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)