একদিন, দু’দিন নয়, ২ বছরের বেশি সময় কেটে গিয়েছে। কিন্তু Sealdah Railway Station-এর উত্তর শাখার মূল গেট বন্ধ। কবে খুলবে সেই গেট। যাত্রীদের সুরক্ষার জন্যই কেন দ্রুত খোলা উচিত এক নম্বর প্ল্যাটফর্মের দিকের গেট লিখলেন সুচরিতা সেন চৌধুরী।
কোভিড পরিস্থিতির মধ্যেই যখন ট্রেন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় তখন এক নম্বর প্ল্যাটফর্মের দিকের গেটের কাজ শুরু হয়েছিল। যার ফলে সেদিক দিয়ে ঢোকার বা বাইরে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তখন ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় কোনও সমস্যা হয়নি। খোলা ছিল বাকি গেট। যেমন বিআর সিং হাসপাতালের দিকের মূল অংশ আর মাঝের দুটো ছোট ছোট গলি। সে গলি এতটাই ছোট যে সেখানে যে কোনও সময় হুড়োহুড়িতে মানুষ পদপিষ্ট যদি হয়ে যায় তাহলে তা অস্বাভাবিক হবে না।
এর পর ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে বিধি নিষেধ মেনে, আবার বন্ধ হয়েছে। একটা দীর্ঘ সময় পর্যন্ত শুধু স্টাফ স্পেশাল ট্রেন চলেছে। যে কারণে বড় কোনও সমস্যা হয়নি। কিন্তু এখন পরিস্থিতি কিন্তু আর গত ২ বছরের মতো নেই। বরং ট্রেন চলাচল যেমন স্বাভাবিক হয়েছে তেমনই খুলে গিয়েছে সব অফিস। আর বৃহস্পতিবার থেকে খুলে গিয়েছে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়। এবার মনে হয় আর ঠান্ডা ঘরে বসে থাকার সময় নয় রেল কর্তৃপক্ষের।
শিয়ালদহ রেল স্টেশন দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ১.২ মিলিয়ন যাত্রী যাতায়াত করে। কোভিডের কারণে সেটা হয়তো খানিকটা কমেছে কিন্তু কতটাই বা কমেছে। রাজ্য সরকার যতই লোকাল ট্রেনে ৫০ শতাংশ যাত্রীর কথা বলুক না কেন এটা তারাও জানেন যে সেটা কখনও সম্ভব নয়। ট্রেন চললে, অফিস খোলা থাকলে কোনও শতাংশই ধরে রাখা সম্ভব নয়। সম্ভব হয়ওনি। আর তখনই দেখা দিয়েছে সমস্যা।
প্রতিদিন অফিস টাইমে শিয়ালদহ স্টেশন থেকে বাইরে যাওয়ার আর শিয়ালদহ স্টেশনে ঢোকার রাস্তায় এমন ধাক্কাধাক্কির মুখে পড়তে হয় সঙ্গে পিক পকেট অবধারিত। কারও না কারও হচ্ছেই। শিয়ালদহ স্টেশনে নেমে যাঁরা বিগবাজার বা এনআরএস বা কোলে মার্কেটের দিকে যাবেন তাঁদের জন্য ঠিক আছে। কিন্তু যাঁরা রাজাবাজারের দিকে যাবেন তাঁদের প্রাণ ওষ্ঠাগত হওয়ার জোগার হয় প্রতিদিন দু’বেলা।
দক্ষিণের দিক দিয়ে ধাক্কাধাক্কি করে বেড়িয়ে আসার পর আবার ব্রিজের তলা দিয়ে দু’পাশে বাজার দোকানের মধ্যে দিয়ে পৌঁছতে হবে রাজাবাজারের দিকে। মানে পুরোটাই একটা অপ্রত্যাশিত যুদ্ধ। এখানেই শেষ নয়। এই যে দুটো এক লাফি গলি রয়েছে শিয়ালদহ স্টেশন থেকে বাইরে যাওয়ার সেখান দিয়ে মানুষের পাশাপাশি যাতায়াত করে ভ্যান, ম্যাটাডোর। আর তার ফলে প্রতিদিনই ওই গলিতে একটা ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
এবার সময় এসেছে সিদ্ধান্ত নেওয়ার। শিয়ালদহ রেল স্টেশনের এক নম্বর প্ল্যাটফর্মের দিকের গেট না খুললে মানুষকে আরও সমস্যায় পড়তে হবে। ইতিমধ্যেই সব কিছু খুলে দিয়েছে রাজ্য সরকার। স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে শহর, শহরতলীর জীবন যাপন। তা হলে রাজ্যের ব্যস্ততম রেল স্টেশনের মূল গেট কেন বন্ধ করে রাখা হবে দিনের পর দিন। দীর্ঘদিন হয়ে গিয়েছে সেখানে কোনও কাজ হতেও দেখা যায় না। তার মানে পড়ে রয়েছে অর্ধেক হওয়া কাজ অথবা কাজ হয়ে গেলেও সে গেট খোলা হচ্ছে না। ভাবা হচ্ছে না সাধারণ মানুষের কথা।
আরও একটা আশঙ্কার কথা না বললেই নয়। এতক্ষণ তো বললাম যে সমস্যার মুখে প্রতিদিন পড়তে হচ্ছে সেটা। কিন্তু একবার ভেবে দেখুন তো যদি শিয়ালদহ উত্তর শাখার প্ল্যাটফর্মে কোনও দুর্ঘটনা ঘটে। কত কিছুই তো হতে পারে। সেই পরিস্থিতিতে মানুষ কী করে দ্রুত দুর্ঘটনা স্থল ছেড়ে নিরাপদ জায়গায় পৌঁছবে? সেখানেই হুড়োহুড়ির পরিস্থিতিতে দুর্ঘটনা আরও বড় আকাড় নেবে।সব দিক খতিয়ে দেখে যুদ্ধকালীন তৎপড়তায় খুলে দেওয়া উচিত শিয়ালদহ ১ নম্বরের দিকের রাস্তা। অনুরোধ রেলের কাছে।
প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে
(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)