বুধবার Himachal Pradesh-এ মেঘ ভাঙা, আকস্মিক বন্যা এবং ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বিস্তির্ণ এলাকা। গরমের ছুটিতে এই সময় প্রচুর মানুষ ঠান্ডার সন্ধানে ছুটে যান বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায়। তার মধ্যে অবশ্যই অন্যতম হিমাচল প্রদেশ। শিমলা, কুলু, মানালি, ধর্মশালা, খাজিয়ার-সহ হিমাচলের প্রতিটি কোণাই পর্যটকদের কাছে আগ্রহের কেন্দ্রে থাকে। তবে বুধবারের ঘটনার পর একটু খোঁজ খবর নিয়েই হিমাচল ঘুরতে যাওয়া উচিত।
বুধবারের মেঘ ভাঙা বৃষ্টিতে এখনও পর্যন্ত দু’জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। কাংড়া জেলার মানুনি খাদ থেকে দু’টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, অন্যদিকে খানিয়ারা মানুনি খাদে জলস্তর বৃদ্ধির ফলে ইন্দিরা প্রিয়দর্শিনী জলবিদ্যুৎ প্রকল্পস্থলের কাছে একটি শ্রমিক কলোনিতে কর্মরত প্রায় ১৫-২০ জন শ্রমিক ভেসে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্থানীয় প্রশাসনের মতে, বৃষ্টিপাতের কারণে প্রকল্পের কাজ স্থগিত রাখা হয়েছিল এবং শ্রমিকরা ঘটনাস্থলের কাছে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন, যখন মানুনি খাদ এবং কাছাকাছি ড্রেন থেকে বন্যার জল শ্রমিক কলোনীর দিকে ঢুকে পড়ে এবং শ্রমিকদের ভাসিয়ে নিয়ে যায়।
রাজ্য দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া বাহিনী (SDRF), স্থানীয় প্রশাসন, গ্রাম পঞ্চায়েত এবং রাজস্ব বিভাগের দল অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযানের জন্য ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এক পোস্টে ধর্মশালার বিজেপি বিধায়ক সুধীর শর্মা জানিয়েছেন যে এই ঘটনায় প্রায় ২০ জন শ্রমিক ভেসে গেছেন।
প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যে উদ্ধার অভিযান সঠিকভাবে চালানো সম্ভব হচ্ছে না যে কারণে বিস্তারিত তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি। এদিকে, কুল্লু জেলার বেশ কয়েকটি জায়গায় মেঘ ভাঙার ফলে আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় তিনজন নিখোঁজ হয়েছেন, যার ফলে অনেক বাড়িঘর, একটি স্কুল বাড়ি, দোকান, সংযোগকারী রাস্তা এবং ছোট সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।
কুল্লু জেলার সাঁইঞ্জের জীবা নালা এবং রেহলা বিহাল এবং গাদসা এলাকার শিলাগড়ে তিনটি জায়গায় মেঘ বাঙার ঘটনা ঘটেছে।রেহলা বিহালে কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা তাদের বাড়ি থেকে মূল্যবান জিনিসপত্র সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করার সময় তিনজন বন্যায় ভেসে গেছেন, এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। মানালি এবং বানজার থেকেও আকস্মিক বন্যার খবর পাওয়া গিয়েছে এবং অনুসন্ধান অভিযান চলছে, কুল্লুর এডিসি অশ্বিনী কুমার জানিয়েছেন।
মানালির কাছে মানালি-চণ্ডীগড় জাতীয় মহাসড়ক আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কারণ বিয়াস নদীর প্রকোপে মহাসড়কের একটি অংশ ভেঙে পড়েছে। তবে, যানবাহন চলাচল এখনও করছে। কুল্লুর বেশ কয়েকটি স্থানে ভারী বন্যার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ছবি ধরা পড়েছে।
বানজার মহকুমায়, হর্নাগড় এলাকায় বন্যার কারণে একটি সেতু ভেসে পড়েছে । “সকাল থেকে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। আমি বেশ কয়েকটি ফোন পেয়েছি যে সাঁইঞ্জ, তীর্থান এবং গাদসায় বৃষ্টিপাতের ফলে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আমি জনগণকে নদী এবং নদী সংলগ্ন জলাশয় থেকে দূরে থাকার জন্য আবেদন করব। মানুষ সমস্যায় থাকায় আমি প্রশাসনকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেছি,” বানজারের বিধায়ক সুরিন্দর শৌরি বলেছেন।
বিয়াস এবং শতদ্রু নদীতেও জলের স্তর বেড়েছে। লাহূল-স্পিতিতে পুলিশ জানিয়েছে যে ভূমিধস এবং ড্রেন উপচে পড়ার কারণে কাজা থেকে সামদোহ যাওয়ার রাস্তাটি বেশ কয়েকটি জায়গায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে পালামপুরে ১৪৫.৫ মিমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, তারপরে যোগিন্দরনগর (১১৩ মিমি), নাহান (৯৯.৮ মিমি), বৈজনাথ (৮৫ মিমি), পোঁতা সাহেব (৫৮.৪ মিমি), গোহর (৫৫ মিমি), ধর্মশালা (৫৪.১ মিমি), জাটন ব্যারেজ (৪৯.২ মিমি), কাংড়া (৪৪.৪ মিমি), নারকান্দা (৪১ মিমি), জোট (৩০ মিমি), রায়পুর ময়দান (২৯.২ মিমি), আম্ব (২৫.৬ মিমি) এবং কাসৌলি (২২ মিমি) রয়েছে।
এদিকে, সুন্দরনগর এবং কাংড়ায় বজ্রপাত হয়েছে এবং তাবোতে ৫৬ কিমি প্রতি ঘণ্টা বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইছে।
স্থানীয় আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বুধবার রাজ্যের সবচেয়ে ঠান্ডা ছিল লাহুল-স্পিতির কুকুমসেরি, যেখানে তাপমাত্রা ছিল ১৩.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যেখানে উনা ছিল সবচেয়ে উষ্ণতম স্থান, যেখানে তাপমাত্রা ছিল ৩৩.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অফিস বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পাঁচটি জেলার – চাম্বা, কাংড়া, মান্ডি, সিমলা এবং সিরমাউরের কিছু অংশে নিম্ন থেকে মাঝারি ধরণের আকস্মিক বন্যার ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক করেছে।
২৯ জুন পর্যন্ত আগামী চার দিন ধরে চার থেকে সাতটি জেলার বিচ্ছিন্ন স্থানে ভারী বৃষ্টিপাতের কমলা সতর্কতাও জারি করা হয়েছে।
প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে
জাস্ট দুনিয়ার সঙ্গে গোটা বিশ্বকে রাখুন নিজের পকেটে। Follow Us On: Facebook, Twitter, Google