জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: গ্রীস্মের দাবদাহ চলছেই। আর তার উপর চূড়ান্ত আর্দ্রতা। যার ফলে সারাক্ষণই ঘাম হচ্ছে যা শরীর থেকে জলের পরিমাণ কমিয়ে দিচ্ছে (Summer Lifestyle )। সে কারণে জল ও জলীয় পদার্থের পরিমাণ খাদ্য তালিকায় বাড়াতে হবে। কমাতে হবে তেল-মশলাদার খাবার। তবেই এই গরমে সুস্থ থাকা যাবে। সকাল থেকে রাত কেটে যায় অফিসে, কলেজে, কাজের মধ্যে। তার সঙ্গে রয়েছে এই গরমে যাতায়াত। প্রচন্ড ঘাম হচ্ছে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি থাকায়। তাই সারাক্ষণ শরীরকে সতেজ রাখতে হবে। দেখে নেওয়া যাক শরীরকে গরমে সুস্থ রাখতে কী কী নিয়ম মেনে চলতে হবে।
১) রোদের মধ্যে রাস্তায় বেরলে ছাতা ব্যবহার মাস্ট। যাতে সূর্যের তাপ সরাসরি শরীরে না লাগে। তাতে যেমন ত্বক পুড়ে যাবে তেমনই শরীরের অন্দরেও ক্ষতি হবে। ত্বককে বাঁচাতে হাত-পা ঢাকা জাম-কাপড় পড়তে হবে। ব্যবহার করতে হবে সানস্ক্রিম লোশন। যাতে ত্বক পুড়বে কম। অফিস ঢুকে বা বাড়ি ফিরে সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের উন্মুক্ত জায়গা ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। বিশেষ করে মুখ ও হাত। তাতে যেমন অনেক ফ্রেশ লাগবে তেমনই ত্বকের উপর থেকে সনস্ক্রিনের প্রলেপটা সরে যাবে। নতুন করে হালকা কোনও ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করা যেতে পারে সেই সময়। সঙ্গে ঘাম থেকে বাঁচতে পাউডার।
২) দ্বিতীয়ত, জামা-কাপড় পড়ার ক্ষেত্রেও নজর রাখতে হবে। যেমন এই গরমের সময় চেষ্টা করা উচিৎ সুতির তৈরি জিনিস পরা। তাতে গরম কম লাগে। ত্বকের উপরও খারাপ প্রভাব পড়ে না। এর সঙ্গে প্রতিদিনের পরিধান ধুয়ে দিতে হবে। ঘামে ভেজা জামা-কাপড় হাওয়ায় শুকিয়ে পরের দিন আবার পড়লে তাতে নানা সমস্যা হতে পারে। বিশেষ করে ঘামের গন্ধ তৈরি হতে পারে। সে কারণে প্রতিদিন পরিষ্কার জিনিসই পরা উচিৎ। আর একান্তই তা সম্ভব না হলে খুব বেশি হলে দু’দিন পরা যায় একটা ড্রেস। তবে সেটা যদি রোদে রেখে দেওয়া যায় কিছুক্ষণ তাহলে ভাল হয়।
এ তো গেল বাহ্যিক পরিচর্চা। কিন্তু এর থেকেও বেশি প্রয়োজন অন্দরের সুরক্ষা। সেটাই আসল।
৩) এই সময় প্রচুর পরিমাণে জল পান করতে হবে। ৩-৪ লিটার জল ২৪ ঘণ্টায় পান করতেই হবে। তাতে ঘামের মাধ্যমে বেরিয়ে যাওয়া জলের জন্য শরীরে জলের ঘাটতি হবে না। নিয়ম করে এই জলটা পান করতেই হবে। খুব বেশি চা-কফি না পান করাই ভাল। তাতে শরীরের গরম বোধ বেড়ে যায়। চা-এর ক্ষেত্রে গ্রিন টি-র ব্যবহার স্বাস্থ্যকর। এ ছাড়া লেবু জল, নুন-চিনির জল নিয়মিত খেলে শরীর ডি-হাইড্রেড হয়ে পড়বে না।
৪) তালিকায় রাখতে হবে বেশ কিছু ফল। তার মধ্যে এই তিনটি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খাবারের তালিকায় রাখলে গরমের প্রভাবে দুম করে শরীর খারাপ হবে না। সঙ্গে বাড়বে ইমিউনিটি। এই সময় গরম ও আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে নানারকমের রোগ দেখা যায়। তার মধ্যে অন্যতম জ্বর, সর্দি, কাশি, ডায়রিয়ার মতো সমস্যা।
৫) দ্রুত হজম হয় তেমন খাবারই রাখতে হবে প্রতিদিনের মেন্যুতে। ব্রেক ফাস্ট সেরে ফেলা যেতে পারে ফলের রস বা দুধ-কর্নফ্লেক্স দিয়ে। যা স্বাস্থ্যকরও। বা স্বাদের কথা না ভাবলে এক গ্লাস ছাতুর সরবতের কোনও বিকল্প হয় না গরমে ব্রেকফাস্ট হিসেবে। পেটও ভরবে স্বাস্থ্যও ঠিক থাকবে। শরীর ঠান্ডা থাকবে। সরবত খেতে ভাল না লাগলে ছাতু-দই দারুণ ব্রেকফাস্ট। আলাদা করে দইও প্রতিদিনের মেন্যুতে রাখা যেতে পারে। বিকেলে কাজের ফাকে এক বাটি টক দইয়ের কোনও বিকল্প হয় না। দই ভাল না লাগলে লস্যিও দৌঁড়বে
৬) লাঞ্চ বা ডিনারের দিকে এইসময় খুব মন দিতে হবে। লাঞ্চটা যেহেতু বাইরেই হবে সে কারণে খু হালকা কিছু রাখতে হবে। রুটি-তরকারি খুব স্বাভাবিক টিফিন বাঙালির। এর বাইরে রাখা যেতে পারে সবজি সেদ্ধ যা পেট ভরানোর জন্য যথেষ্ট। সঙ্গে একটা কোনও ফল। লাঞ্চে যেহেতু অফিসের ঠান্ডা ঘরে বসে থাকবেন সে কারণে খুব পেট ভড়ে না খাওয়াই ভাল। লাঞ্চে দই-চিরেও রাখা যেতে পারে। পেট একদম ঠান্ডা থাকবে। আর বাড়িতে থাকলে লাঞ্চে মাছ-মাংস রাখুন কিন্তু রান্না যেন হালকা হয়।
৭) ডিনারের ক্ষেত্রেও একই পন্থা অনুসরণ করুন। কারণ রাতে সব থেকে কম খেতে হয়। যাঁরা রাতে রুটি খান তাঁরা সঙ্গে হালকা কোনও সবজি বা চিকেন স্টুর মতো খাবার রাখতে পারেন। ভাতের ক্ষেত্রেও এই একই মেন্যু থাকতে পারে। তবে পরিমাণটা কম হবে। রাতে ভাত, রুটি না খেতে চাইলে চিকেন স্টু বা শুধুই সেদ্ধ ডালের সঙ্গে দুটো পাউরুটি খেয়ে নিলেও মন্দ হয় না। হালকাও হয় আবার প্রোটিনযুক্তও খাদ্য থাকে তালিকায়। লাঞ্চ আর ডিনারের মাঝে বিকেল, সন্ধ্যেয় চা বা কফি পান করলে তার সঙ্গে বিস্কুট, মুড়ি জাতীয় জিনিস রাখতে পারেন।
প্রবল এই গরমে খাদ্য তালিকায় ঠিক রাখতে পারলেই বাজিমাত। সারাদিন নিজেকেও ফ্রেশ রাখা যাবে। শারীরিকভাবেও সুস্থ থাকবেন।
প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে
(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)