প্রো-লাইসেন্স পেয়েও কি কদর পাবেন শঙ্করলাল

সুচরিতা সেন চৌধুরী: খেলোয়াড় জীবনে যা সম্ভব হয়নি তা কোচিং জীবনে করে দেখিয়ে দিলেন শঙ্করলাল চক্রবর্তী। যদিও বাংলা বাজারে আবার ভারতীয় তথা বাঙালি কোচেদের কদর নেই বললেই চলে। সাফল্য ব্যর্থতার ওঠা-নামার বিচার করেন ফুটবলে কখনও লাথি না মারা কর্তারা। তার ফল যা হওয়ার তাই হচ্ছে। তবে আজ আমি বাংলার ফুটবল কর্তাদের সমালোচনা করতে বসিনি। বরং একটা লড়াইকে তুলে ধরতে চাই। তা নিয়ে যদিও বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই সেই মানুষটার। তবে আগামী প্রজন্মের জন্য শঙ্কর একটা উদাহরণ। একটা লড়াইয়ের পথ প্রদর্শক।

আজকে হঠাৎ কেন শঙ্করলালের কথা বলছি? আসলে বাংলার ফুটবল মানচিত্র থেকে অসাধ্য সাধন করেছেন তিনি। পেয়ে গিয়েছেন প্রো-লাইসেন্স। এখন এশিয়ার যে কোনও ক্লাবে অনুশীলন করাতে পারবেন তিনি। যে কৃতিত্ব কোনও বাঙালির নেই। এই তালিকায় বেশ কয়েকজন ভারতীয় রয়েছেন। যেমন স্যাভিও মেদেইরা, খালিদ জামিল, বিনো জর্জ। এবার সেই দলে ঢুকে পড়লেন বাংলার শঙ্কর।

শঙ্করের খেলোয়াড় জীবন ছোট করে দিয়েছিল চোট। চিমার সঙ্গে ঝামেলায় যে চোট পেয়েছিলেন তা সারিয়ে আর মাঠে ফিরতে পারেননি। হতাশায় ডুবে গিয়েছিলেন। একটা সময় মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন ফুটবল থেকে। ঠিকই করে নিয়েছিলেন আর ফুটবলের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ রাখবেন না। কিন্তু স্ত্রীর প্রেরণায় আবার মাঠে ফেরা। কোচিং শুরু। সালটা ২০১২। তার পর থেকে থমকাতে হয়েছে অনেকবার কিন্তু থেমে যাননি। বরং প্রতিনিয়ত নিজেকে আপডেট করে চলেছেন। বাংলার ফুটবল তাঁকে ব্যবহার করতে পারেনি। আপাতত তিনি দিল্লির আই লিগ দল সুদেবা এফসির কোচ।

২০১৪ সালে সঞ্জয় সেনের সহকারি হিসেবে আইলিগ জয়ী মোহনবাগান দলের সদস্য ছিলেন। এর পর মোহনবাগানের সম্পূর্ণ দায়িত্ব ওঠে তাঁর হাতে। তাঁর কোচিংয়ে ডার্বি যেতে মোহনবাগান। না দীর্ঘস্থায়ী হয়নি বড় ক্লাব। যেমনটা হয়ে থাকে কলকাতার ক্লাবগুলোতে। ভবানীপুরেও কোচিং করিয়েছিলেন। তার মধ্যেই একটার পর একটা লাইসেন্স করে গিয়েছেন। এবার তিনি প্রো-লাইসেন্সধারী। ভারতীয় ফুটবল পারবে কি তাঁকে ব্যবহার করতে?

ভারতীয় ফুটবলের মসনদে এখন শঙ্করলালের বেস্ট ফ্রেন্ড কল্যাণ চৌবে। ন’য়ের দশকে শঙ্কর-কল্যাণ-দীপেন্দুকে বাংলার ফুটবলের তিনমূর্তি বলা হতো। দীপেন্দু বিশ্বাস ও কল্যাণ চৌবের ফুটবল কেরিয়ারে সাফল্য তো ছিলই সঙ্গে দীর্ঘও ছিল। কিন্তু শঙ্করের হয়নি। তবে তাতে বন্ধুত্বে ছেদ পড়েনি। অন্যদিকে, কোনও রাজনৈতিক দলের সাথে-পাছে থাকেননি শঙ্করলাল কিন্তু দীপেন্দু ও কল্যাণ এখন রীতিমতো রাজনৈতিক মুখ। সব মিলে অনেক অমিলের মধ্যেও বন্ধুত্বটা থেকে গিয়েছে। সেই বন্ধুত্ব আর ভারতীয় ফুটবলের উন্নতিতে শঙ্করের মতো অভিজ্ঞ ও শিক্ষিত কোচকে বর্তমান ফুটবল প্রশাসন কতটা ব্যবহার করতে পারে এখন সেটাই দেখার।

প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে

জাস্ট দুনিয়ার সঙ্গে গোটা বিশ্বকে রাখুন নিজের পকেটে। Follow Us On: FacebookTwitterGoogle