কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে আইপিএল ১৫র প্রথম ম্যাচে নেমেই নায়ক হয়ে গেলেন অজি ক্যাপ্টেন প্যাট কামিন্স (IPL 2022, KKR vs MI)। এক ওভারেই খেলার মোড় ঘুরিয়ে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে দুরন্ত জয় এনে দিলেন কলকাতাকে। লিখলেন সুচিন্তা পাল চৌধুরী।
এদিন মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং এর সিদ্ধান্ত নেয় কলকাতা। মুম্বই শিবির থেকে ওপেনিংয়ে আসেন ক্যাপ্টেন রোহিত শর্মা এবং ঈশান কিশান। প্রথম ওভারে মাত্র দু’রান দিয়ে কেকেআরের হয়ে বোলিং শুরু করেন উমেশ যাদব। ৩ ওভারের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় মুম্বই। ১২ বলে মাত্র ৩ রান করে উমেশ যাদবের বলে স্যাম বিলিংসের হাতে ক্যাচ আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান ক্যাপ্টেন রোহিত। ৭.৫ ওভারে স্কোর যখন ৪৫-১ তখন ওভারের শেষ বলে দ্বিতীয় উইকেট হারাতে হয়। ১৯ বলে ২৯ রান করে বরুণ চক্রবর্তীর বলে স্যাম বিলিংসের হাতে ক্যাচ আউট হন ডিওয়ালড ব্রেভিস।
১১ ওভারের মাথায় ২১ বলে ১৪ রান করে কামিন্সের বলে শ্রেয়াস আয়ারের হাতে বল তুলে আউট হন ঈশান কিশান। মুম্বইয়ের স্কোর তখন ৫৫-৩। এবারের আইপিএলে কেকেআরের হয়ে প্রথম মাঠে নেমে বোলিংয়ে নজর কারেন রাশিদ সালেম। সঙ্গে অনবদ্য উমেশ যাদব।
এরপর মাঠে আসেন সূর্য কুমার যাদব এবং তাঁকে সঙ্গ দেন তিলক ভার্মা। সূর্য কুমারের ৩৬ বলে ৫২ রানের ইনিংসে গতি পায় মুম্বইয়ের ব্যাটিং। এরপর ২০ ওভারের শুরুতেই কামিন্সের বলে বিলিংসের হাতে ক্যাচ আউট হন সূর্যকুমার। মুম্বইয়ের স্কোর তখন ১৩৮-৫। এরপর শেষ ৫ বলে ২২ রান করে মুম্বইকে ১৩৮ থেকে ১৬১ রানে পৌঁছে দেন পোলার্ড। সঙ্গে ২৪ বলে ৩৮ নট আউট তিলক ভার্মা। কলকাতার সামনে ১৬২ রানের লক্ষ্য রাখে মুম্বই।
১৬২ রান তাড়া করতে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে নাইট শিবির থেকে ওপেনিংয়ে আসেন অজিঙ্ক রাহানে এবং ভেঙ্কটেশ আয়ার। ৫ ওভারের মাথায় প্রথম উইকেট পতন হয় নাইট শিবিরে। টাইমল মিলসের বলে ড্যানিয়েল স্যামসের হাতে ক্যাচ আউট হন রাহানে। ৭ বলে তার রান ১১। ৬ ওভারের মাথায় ৬ বলে ১০ রান করে স্যামসের বলে তিলক ভার্মার হাতে বল তুলে মাঠ ছাড়েন ক্যাপ্টেন শ্রেয়াস। ১০ ওভারের মাথায় ১২ বলে ১৭ রান করে মুরুগান অশ্বিনের বলে বাসিল থাম্পির হাতে ক্যাচ আউট হয়ে যান বিলিংস। ১২ ওভারের মাথায় অশ্বিনের বলে স্যামসের হাতে ক্যাচ আউট হন নিতীশ রানা। এরপর মাঠে আসেন কেকেআরের ম্যাচ উইনার আন্দ্রে রাসেল। কিন্তু মুম্বইয়ের বোলিংয়ের সামনে তিনিও বেশিক্ষণ দাঁড়াতে পারেননি। ৫ বলে ১১ রান করে মিলসের বলে ব্রেভিসের হাতে ক্যাচ আউট হয়ে ফিরে যান রাসেল।
মুম্বই ততক্ষণে ম্যাচ প্রায় নিজেদের দিকে করে নিয়েছিল বলেই মনে করা হচ্ছিল। কেকেআর-এর স্কোর তখন ১০১-৫। ৪১ বলে দরকার ৬১ রান। কেকেআর-এর হয়ে ব্যাট হাতে মাঠে আসেন প্যাট কামিন্স। হঠাৎই পুণের স্টেডিয়ামে বিধ্বংসী হয়ে ওঠন কামিন্স। ১৫ ওভারে বল করছিলেন যশপ্রীত বুমরা, তাঁর ওভারে আসে ১২ রান। ১৬ ওভারে বল করতে আসেন ড্যানিয়েল স্যামস।এই ওভারেই একের পর এক ৪-৬ হাঁকান কামিন্স। কিন্তু ওভারের ৫ নম্বর বলে বাউন্ডারি লাইন থেকে কামিন্সের চমৎকার ক্যাচ ধরেন সূর্যকুমার। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত বলটি নো বল হয়। আর এই নো বলেই ৪ মেরে ১৪ বলে ৫০ করে আইপিএলের ইতিহাসে দ্বিতীয় দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরির রেকর্ড তৈরি করেন কামিন্স। ওভারের শেষ বলে ৬ মেরে মুম্বইয়ের হাত থেকে ম্যাচ ছিনিয়ে এনে কেকেআরকে দুর্ধর্ষ জয় উপহার দেন কামিন্স। অন্যদিকে ১ ওভারে ৩৫ রান দিয়ে ম্যাচের ভিলেন ড্যানিয়েল স্যামস।
কামিন্সের সঙ্গে মাথা ঠান্ডা রেখে সমানতালে ব্যাটিং করে ৪১ বলে ৫০ রান করে অপরাজিত থাকেন ভেঙ্কটেশ আয়ার। কামিন্স ও ভেঙ্কটেশ জুটির কাছে ধুলিস্মাৎ হয়ে গেল মুম্বইয়ের বোলিং। ২৪ বল বাকি থাকতে জয় পেল কেকেআর। ৪টি ৪ এবং ৬টি ৬ মেরে ম্যাচের সেরা প্যাট কামিন্স।
প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে
(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)