জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: এসসি ইস্টবেঙ্গল আদৌ আইএসএল ২০২০-২১-এ খেলবে কিনা তা নিয়ে ছিল প্রচুর জল্পনা। এসসি ইস্টবেঙ্গলের আইএসএল অভিষেক হতে চলেছে ডার্বি ম্যাচ দিয়ে। ২৭ নভেম্বর এটিকে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে কঠিন ম্যাচ দিয়ে আইএসএল ৭ অভিযান শুরু করা নিয়ে অবশ্য বিন্দুমাত্র চাপ নেই তারা। বরং এই সূচিকে স্বাগত জানিয়েছেন লাল-হলুদ শিবিরের একাধিক তারকা। সবচেয়ে বড় কথা কঠিন ম্যাচ দিয়ে লিগ শুরুর প্রস্তুতিও জোর কদমে নিচ্ছেন তাদের কোচ রবি ফাউলার। একসময়ে যাঁকে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের গোল মেশিন বলে ডাকা হত।
এসসি ইস্টবেঙ্গল মাঝমাঠে যেমন রয়েছেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলে আসা জাক মাঘোমা ও তরুণ ভারতীয় তারকা ইউজেনসেন লিংডো, তেমনই রক্ষণে ড্যানিয়েল ফক্স, স্কট নেভিলের মতো বিদেশি তারকা ও লালরাম চুলোভা, নারায়ণ দাসের মতো দেশীয় ফুটবলাররা। আক্রমণে কোনও বিদেশি না থাকলেও জেজে লালপেখলুয়া, বলবন্ত সিং, সিকে বিনীতদের মতো দেশীয় ফুটবলাররা কিছু কম যান না। গোলেও তেমন দেবজিৎ মজুমদার, শঙ্কর রায় অভিজ্ঞ ও দক্ষ। লিগের নিয়ম অনুযায়ী পাঁচজন বিদেশি ও ছ’জন দেশীয় ফুটবলার মাঠে নামাতে পারবে প্রতি দল। সেই সঠিক কম্বিনেশনের লক্ষ্যে কোচ ফাউলার।
বিদেশি তারকাদের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কঙ্গোর ইপিএল তারকা মাঘোমা। গত পাঁচটি মরশুম তিনি ইংলিশ ক্লাব বার্মিংহাম সিটির হয়ে খেলেছেন। দেশের হয়ে ২২টি ম্যাচও খেলেছেন তিনি। টটেনহাম হটস্পারের জুনিয়র অ্যাকাডেমি থেকে উঠে আসা এই মিডফিল্ডার বার্টন আলবিয়ন ও শেফিল্ড ওয়েডনেসডে-র হয়ে খেলার পরে ২০১৫-তে বার্মিংহামে যোগ দিয়েছিলেন। ২০১৭-১৮-য় প্রিমিয়ার লিগ ক্লাব বার্মিংহাম সিটির প্লেয়ার অফ দ্য সিজনের খেতাব জিতে নিয়েছিলেন ৩৩ বছর বয়সি মাঘোমা। এই ক্লাবের হয়ে ৪১৭টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। ৫৭টি গোল করেছেন, ৫৫টি গোল করিয়েছেন।
মাঘোমা ছাড়াও দুই আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডার আইরিশ অ্যান্থনি পিলকিংটন ও ওয়েলশের অ্যারন আমাদি হলোওয়ে আক্রমণে সিদ্ধহস্ত। যে কোনও সময়ে বিপক্ষের গোলের সামনে বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারেন তাঁরা। ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের অনূর্ধ্ব ১৮ দলের প্রাক্তন সদস্য ৩২ বছর বয়সি পিলকিংটন ইংল্যান্ডে প্রায় চারশো ম্যাচ খেলেছেন। ১৪ বছরের ফুটবল জীবনে তিনি ৮৩টি গোল করেছেন। ২০১১ থেকে ২০১৪ তিনি খেলেন প্রিমিয়ার লিগ ক্লাব নরউইচ সিটির হয়ে। সেখানে ৭৫টি ম্যাচে ১৪টি গোল করেন ও পাঁচটি গোলে অ্যাসিস্ট করেন। পরের পাঁচ বছর তিনি কার্ডিফের হয়ে খেলেন। সেখান থেকে গত বছর উইগান অ্যাথলেটিক্সে যোগ দেন।
২৭ বছর বয়সি অ্যারন এর আগে ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার ক্লাব ব্রিসবেন রোর-এ। গত মরশুমে তিনি ২৩টি ম্যাচ খেলেন। তার আগে ফুটবলজীবনের বেশিরভাগটাই তিনি কাটিয়েছেন উইকোম্বে ওয়ান্ডারার্স, শ্রুসবারি টাউন-সহ ইউরোপের বিভিন্ন ক্লাবে। অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার, স্ট্রাইকার ছাড়াও অতীতে কোচেরা তাঁকে সেন্টার ব্যাক হিসেবেও ব্যবহার করেছেন।
মাঘোমার সঙ্গে মাঝমাঠ সামলানোর দায়িত্ব পেতে পারেন জার্মানির ম্যাটি স্টাইনমান। ২৫ বছর বয়সি স্টাইনমান এ লিগে ওয়েলিংটন ফিনিক্স ও বুন্দেশলিগায় হামবার্গার এসভি দলে খেলে আসা এই ফুটবলার। চোট সারিয়ে দু’বছর পরে মাঠে নেমে মিজো তারকা ফরোয়ার্ড জেজেও নিজেকে প্রমাণ করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠবেন নিশ্চয়ই। বলবন্ত সিং, সিকে বিনীতদের অভিজ্ঞতাও কাজে আসতে পারে ফাউলারের। এ বার ফাউলারের হাতে পড়ে এই দু’জন ফর্মে ফিরতে পারেন কি না, সেটাই দেখার।
এসসি ইস্টবেঙ্গলের রক্ষণে এ বার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে চলেছেন ইংল্যান্ডের অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার ড্যানিয়েল ফক্স ও অস্ট্রেলিয়ার স্কট নেভিল। ৩৪ বছর বয়সি ফক্স ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে বার্নলে ও সাউদাম্পটনে খেলেছেন। ভারতে আসার আগে উইগান অ্যথলেটিক্সে খেলতেন কভেন্ট্রি সিটির এই ফুটবলার। অস্ট্রেলিয়ার এ লিগে ১২টি মরশুমে মোট ২২৩টি ম্যাচ খেলে আসা নেভিলের কাছে রয়েছে অভিজ্ঞতার ঝুলি।
গত বছর আই লিগজয়ী মোহনবাগান দল থেকে এসসি ইস্টবেঙ্গলে আসা দুই গোলপ্রহরী দেবজিৎ মজুমদার ও শঙ্কর রায়ের মধ্যে প্রথম দলে থাকার একটা প্রতিযোগিতা দেখা যেতে পারে। দেবজিতের ক্ষেত্রে এটা একই সঙ্গে লাল-হলুদ শিবিরে ও হিরো আইএসএলে প্রত্যাবর্তন। শঙ্করের অবশ্য আইএসএলে খেলার অভিজ্ঞতা নেই। ২০১৮ থেকে তিনি মোহনবাগানে। ডার্বির অভিজ্ঞতা নিয়েই শুরু হবে কোচ ফাইলারের নতুন সিরিজ।
(খেলার জগতের আরও খবর জানতে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে)
(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)
এসসি ইস্টবেঙ্গল স্কোয়াড:
গোলকিপার: দেবজিৎ মজুমদার, শঙ্কর রায়, রফিক আলি, মিরশাদ মিচু
ডিফেন্ডার: অভিষেক অম্বেকর, অনিল চহ্বন, ড্যানিয়েল ফক্স, গুরতেজ সিং, লালরাম চুলোভা, মহম্মদ ইরশাদ, নারায়ণ দাস, এন রোহেন সিং, নভিন গুরুং, রাণা ঘরামি, সামাদ মল্লিক, স্কট নেভিল, প্রীতম সিং
মিডফিল্ডার: অ্যারন আমাদি হলোওয়ে, অ্যান্থনি পিলকিংটন, বিকাশ জায়রু, ইউজেনসন লিংডো, হাওবাম সিং, জাক মাঘোমা, লোকেন মেতেই, মিলন সিং, মহম্মদ রফিক, শেহনাজ সিং, সুরচন্দ্র সিং, ম্যাটি স্টাইনমান, ওয়াহেংবাম লুয়াং, ইউমনাম সিং
ফরোয়ার্ড: বলওয়ন্ত সিং, সি কে বিনীত, গিরিক খোসলা, হরমনপ্রীত সিং, জেজে লালপেখলুয়া