জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: ডার্বির (ISL 2022-23 Kolkata Derby) আগের দিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন দুই দলের দুই অধিনায়ক। জেনে নেওয়া যাক কী বললেন এটিকে মোহনবাগানের প্রীতম কোটাল ও ইস্টবেঙ্গল এফসির ক্লেটন সিলভা।
প্রীতম কোটাল (অধিনায়ক এটিকে মোহনাগান)
গত দশ ম্যাচে ১৭টি গোল খেয়েছেন আপনারা। মাত্র তিনটি ম্যাচে ক্লিন শিট। প্রায় সব ম্যাচেই আপনি খেলেছেন। রক্ষণে ঠিক কী সমস্যা হচ্ছে?
রক্ষণে অবশ্যই আমাদের উন্নতি করতে হবে। গত বছরের তুলনায় এ বার আমাদের ডিফেন্স লাইন-আপ অন্য রকম। গুছিয়ে উঠতে সময় লাগবে। আমরা সমস্যাগুলো মেটানোর জন্য পরিশ্রম করছি। কোচ যে রকম বললেন, আমরা দল হিসেবে খেলি। জিতলেও দল হিসেবেই জিতি ও হারলেও তা দলেরই হার হয়। প্রতি দিনই উন্নতি করছি আমরা। আশা করি, মরশুমের শেষে এখনকার চেয়ে অনেক উন্নত পারফরম্যান্স দেখতে পাবেন।
দলের সিনিয়র ডিফেন্ডার হিসেবে কি আপনি ইস্টবেঙ্গলের আক্রমণ প্রতিরোধ করার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী?
শুধু ইস্টবেঙ্গল নয়, ডিফেন্ডার হিসেবে প্রতি ম্যাচেই আমার একটা দায়িত্ব থাকে। সেই দায়িত্ব থেকেই প্রতি ম্যাচে প্রতিপক্ষের আক্রমণ আটকানোর চেষ্টা করি। সব দলের বিরুদ্ধেই একই লক্ষ্য থাকে।
ইস্টবেঙ্গলের কোচ বলেছেন, কাল ক্লেটন সিলভার কাছ থেকে তিনি একটি হ্যাটট্রিক চান। এই বিষয়ে কী বলবে?
সেটা তো কালই বোঝা যাবে, কে হ্যাটট্রিক করবে বা করবে না। তা ছাড়া ওকে আটকানোর দায়িত্ব আমার একার নয়, পুরো দলেরই। আমরা দল হিসেবেই খেলব। ইস্টবেঙ্গলেরও আশা করি শুধু সিলভা নয়, পুরো দলই খেলবে। সিলভার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, ব্যাপারটা মাঠে দেখা যাবে। সাংবাদিক বৈঠকে এ ভাবে বলে কোনও লাভ নেই মাঠে প্রমাণ করতে হবে।
অনেকেই কাল আপনাদের ফেভারিট বলছেন। এর ফলে আপনাদের ওপর বেশি চাপ থাকবে?
ডার্বিতে সব সময়ই ৫০-৫০ সম্ভাবনা থাকে। ফেভারিট বলে কিছু হয় না। কাল মাঠে যাদের সাহস, আবেগ বেশি থাকবে, তারাই জিতবে বলে মনে হয় আমার। আমার মনে হয় আমাদের মতো ওরাও কাল জিততেই নামবে। আমাদের ওপর কোনও বাড়তি চাপ নেই। আমরা যদি আমাদের সেরা খেলাটা খেলতে পারি তা হলে আমরা জিতব। সমর্থকদের মুখের হাসিটা দেখাই আমাদের প্রেরণা। দল হিসেবে আমাদের উন্নতি করা এবং এই ম্যাচ থেকে তিন পয়েন্ট অর্জন করাটা খুবই দরকার।
আপনি এমন একজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড়, যার যুবভারতীর ভরা গ্যালারির সামনে ডার্বি খেলার অভিজ্ঞতা আছে। গত দু বছরে যাদের এই অভিজ্ঞতা হয়নি, তাদের কী ভাবে নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে উজ্জীবিত করার চেষ্টা করবেন?
আমার মনে হয়, কোচিতে কেরালা ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে খেলতে গিয়ে দলের সবার সেই অভিজ্ঞতা হয়েছে। ওখানে ৭০ হাজার দর্শক ছিল ও আবহও ছিল চরম। আমি সতীর্থদের কখনওই ডার্বিকে কোনও স্পেশ্যাল ম্যাচ হিসেবে ধরতে বলব না। অন্য যে কোনও ম্যাচের মতো করেই নিতে বলব। এই ম্যাচেও আমাদের সেরাটা দিয়ে জিততে হবে।
ক্লেটন সিলভা (অধিনায়ক ইস্টবেঙ্গল এফসি)
ডুরান্ড কাপের ডার্বি আর এই হিরো আইএসএলের ডার্বি, আপনার নিজের দল ও প্রতিপক্ষ দলে কী ফারাক লক্ষ্য করছেন?
প্রথম ডার্বির আগে প্রস্তুতির জন্য আমরা কম সময় পেয়েছিলাম। আমি নিজেই ম্যাচের ৩-৪ দিন আগে এসে পৌঁছই। অন্যরাও তার কয়েকদিন আগেই এসে পৌঁছয়। এখন আমরা প্রায় দু’মাস ধরে একসঙ্গে আছি। ফলে অনেক ভাল ভাবে প্রস্তুত। দুই দলের কাছেই ম্যাচটা বেশ আকর্ষণীয় হতে চলেছে। ওদের দলটা ভাল। ভারতের কয়েকজন সেরা খেলোয়াড় ওদের দলে রয়েছে। তবে ম্যাচটা ৫০-৫০। গত ডার্বিতে হারলেও এই ম্যাচে আমাদের জেতার সম্ভাবনা যথেষ্ট। আমরা কাল জেতার জন্যই মাঠে নামব।
আপনি ব্যাঙ্কক ডার্বিতেও খেলেছেন। দুই ডার্বির মধ্যে তফাৎ কী দেখছেন?
এটা অনেক বড়। কারণ, দুই ক্লাবই অনেক পুরনো। তাইল্যান্ডে ক্লাবগুলো নতুন।
ইস্টবেঙ্গল এফসি-তে কি আপনার ভূমিকা বেঙ্গালুরু এফসি-র চেয়ে আলাদা?
এখানে আমরা একটু অন্যরকম ফুটবল খেলি। বেঙ্গালুরু এফসি-তে আমার ভূমিকাটা ছিল মূলত টার্গেটম্যানের। এখানে তা নয়। একটু ওপরের দিকে খেলি। ভূমিকাটা অন্য রকমের।
ইস্টবেঙ্গল এফসি-র আক্রমণে আপনি অন্যতম সেরা অস্ত্র। সমর্থকেরা গোলের জন্য কাল আপনার দিকেই তাকিয়ে থাকবেন। প্রতিপক্ষও আপনাকে কাল কড়া মার্কিংয়ে রাখবে। এ জন্য কি বাড়তি চাপ অনুভব করছেন?
ভাল পারফরম্যান্সের ফল এগুলো। আমাদের দলে অনেক ভাল খেলোয়াড় আছে। জর্ডান ১১ কিলোমিটার দৌড়য়। ওর মতো খেলোয়াড় দলে থাকলে অনেক সাহায্য পাওয়া যায়। গোল করাটাই সব নয়। কোনও ম্যাচে আমি গোল পাব, কোনও ম্যাচে পাব না, অন্যেরা গোল করবে। ম্যাচ জেতাটাই বড় কথা। স্ট্রাইকার হিসেবে আমি সব সময়ই গোল করতে চাইব। কিন্তু অন্য কেউ গোল করে যদি দলকে ডার্বি জেতায়, তা হলেও খুশি হব।
ইস্টবেঙ্গল কি কাল আন্ডারডগ হিসেবে মাঠে নামবে এবং এর ফলে কি আপনাদের চাপ অনেক কম এবং এটিকে মোহনবাগানকেই বেশি চাপে ভুগতে হবে?
চাপ ওদের ওপরই বেশি। কারণ, ওরা প্রচুর অর্থ ব্যয় করে ভাল ভাল ফুটবলার নিয়ে এসেছে। আমরা আন্ডারডগ নই। তবে এখানে সবাইকে যদি জিজ্ঞেস করা হয়, দশজনের মধ্যে আটজনই বলবে এটিকে মোহনবাগান এই ম্যাচে জিতবে। তবে আমরা শনিবার সবাইকে সারপ্রাইজ দিতে চাই।
বেঙ্গালুরুতে থাকার সময় এটিকে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে খেলেছেন। আবার ইস্টবেঙ্গলের হয়েও ওদের মুখোমুখি হবেন। তফাৎটা কোথায় দেখছেন?
এই ম্যাচকে ওরা অনেক সিরিয়াস ভাবে নেবে। কারণ, এটা ডার্বি। দেশের সবচেয়ে বড় ডার্বি এবং হিরো আইএসএলের সেরা ডার্বি। বেঙ্গালুরু এফসি-র সঙ্গে এটিকে মোহনবাগানের একটা চিরপ্রতিদ্বন্দিতা আছে। কিন্তু এটা একেবারে অন্যরকম। যেখানেই যাবেন, সমর্থকেরা মনে করিয়ে দেবেন, ডার্বি জিততেই হবে আমাদের।
এত মানুষ তাকিয়ে আছে আপনাদের দিকে। এর ফলে কি চাপে রয়েছেন আপনারা?
আমার ওপর কোনও চাপ নেই। আমার কাছে এটা স্বাভাবিক। প্রতি ম্যাচেই মাঠে নেমে আমি আমার খেলাটা খেলি। স্টেডিয়ামে ৬০-৭০ হাজার মানুষ থাকলে যে কোনও ফুটবলারই খুশি হয়। গত দুবার ফাঁকা স্টেডিয়ামে খেলার অভিজ্ঞতার চেয়ে অনেক ভাল।
(লেখা আইএসএল ওয়েবসাইট থেকে)
প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে
জাস্ট দুনিয়ার সঙ্গে গোটা বিশ্বকে রাখুন নিজের পকেটে। Follow Us On: Facebook, Twitter, Google