Spot Light যে কখনওই চিরস্থায়ী নয়, এটাই সত্যি। তাও যখন মাথার উপর লাইট স্থির হয়ে থাকে তখন মনে হয় এটা চিরকালিন। কিন্তু মুহূর্তে সরে যায় সেই আলো। ঠিক ৪৮ ঘণ্টা আগের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামের সঙ্গে ৪৮ ঘণ্টা পরের চিত্রটা কতটা আলাদা। সেই পঞ্জাব কিংস, সেই শ্রেয়াস আইয়ার হাজির একই জায়গা। যেখানে ১ জুনের রাতে নায়কের স্বীকৃতি পেয়েছিলেন পঞ্জাব অধিনায়ক। আর আজ ম্যাচ শেষে কোনও ক্যামেরায় ধরা পড়লেন একবারের জন্যও। স্পট লাইট শ্রেয়াস থেকে এখন বিরাট কোহলিতে। তিনি হাসছেন, তিনি কাঁদছেন, তাঁকে নিয়েই উৎসব চারদিকে। তার মধ্যেই কখন যেন সবার অগোচরে ড্রেসিংরুমে ঢুকে গিয়েছেন সরপঞ্চ। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার জেতার পর থেকেই পঞ্জাব কিংসের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে শ্রেয়াসের নামের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছিল সরপঞ্চ। আজ অগোচরে চোখের জল ফেলছেন হয়তো।
যখন সর্বসমক্ষে হাউ হাউ করে কেঁদে ফেললেন বিরাট কোহলি তখন নেপথ্যেই থেকে গেলেন এক ব্রাত্য অধিনায়ক। আগের দিন যেমন লাইভ ক্যামেরা বার বার ফোকাস করছিল শ্রেয়াসের মুখে, এদিন সেই ক্যামেরায় ধরা থাকল বিরাট কোহলিতে। আগের দিন যখন মাঠ জুড়ে, সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে আলোচনার কেন্দ্রে ছিলেন শ্রেয়াস আইয়ার, আজ বিরাট কোহলি। অভিব্যক্তি দুটো শুধু আলাদা। ম্যাচ শেষে পুরস্কার নিতে যখন মঞ্চে উঠলে তখন দেখা গেল শ্রেয়াসকে। দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনাল জিতে বলেছিল, ‘‘কাজ হাফ ডান হয়েছে।’’ এদিন নতুন কিছু বলতে পারলেন না। আবার সেই পুরনো কথাই বললেন। সঙ্গে বললেন, ‘‘পরের মরসুমে এই কাজ শেষ করব।’’
স্পটলাইট সরে গেল গ্যালারি থেকেও। দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে লাইভ টেলিভিশন ক্যামেরা বার বার জুম ইন আর জুম আউট করছিল একজনেরই মুখে, তিনি প্রীতি জিন্টা। আজ সেই পুরো স্পটলাইটটাই নিয়ে গেলেন অনুষ্কা শর্মা। দু’জনেই বলিউডের প্রথিতজশা অভিনেত্রী। দু’জনেই আপাতত বলিউড থেকে বেশ দূরে। তবে এখানে দু’জন ছিলেন দুই ভূমিকায়। প্রীতি একটি ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিকপক্ষ আর অনুষ্কা শর্মা তারকা ক্রিকেটার বিরাট কোহলির স্ত্রী। তবুও কোথাও যেন মিলে গেল দুটো ছবি। আসলে মাঠের উচ্ছ্বাস, যন্ত্রণা, হার-জিৎ— সব কিছুর আল্টিমেট প্রতিফলন হয় ওই গ্যালারিতে।
না হারের জন্য কেউ পঞ্জাব দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেয়নি, বিশেষ করে যারা এই পুরো মরসুমটা দেখেছেন তাঁরা তো নয়ই। শেষ মুহূর্তে শশাঙ্ক সিংয়ের চোয়ালচাপা লড়াইটাও সবার মন ছুঁয়ে নিল। যখন হতাশায় পিচের উপর ভেঙে পড়েছেন শশাঙ্ক ঠিক তখনই বাউন্ডারি লাইনে মুখ ঢেকে বসে পড়েছেন বিরাট কোহলি। আসলে এই জয়টা পুরো বেঙ্গালুরু দল চেয়েছিল বিরাটের জন্যই। ঠিক যেমন ২০০৭ ক্রিকেট বিশ্বকাপ পুরো ভারতীয় দল জিততে চেয়েছিল সচিন তেন্ডুলকরের জন্য, যেমন পুরো আর্জেন্টিনা দল ফিফা বিশ্বকাপ জিততে চেয়েছিল লিওনেল মেসির জন্য, ঠিক তেমনই এই বেঙ্গালুরু দল আইপিএল ২০২৫ জিততে চেয়েছিল বিরাট কোহলির জন্য।
বিরাটের এটা প্রাপ্য ছিল, বেঙ্গালুরুরও এই জয় প্রাপ্য ছিল। বিগত ১৮ বছর ধরে সব দলে প্লেয়ার বদল হয়েছে। এমন কী এমএস ধোনিও অন্য দলে খেলতে বাধ্য হয়েছেন কিন্তু বিরাট কোহলি সব ব্যর্থতার দায় কাঁধে নিয়ে থেকে গিয়েছেন বেঙ্গালুরুতেই। তাই সংকল্পটা করেই ফেলেছিলেন, হার, জয় যাই আসুক বা লোভনীয় অফার আসুক শেষ পর্যন্ত এই দলের সঙ্গেই থেকে যাবেন। একই সংকল্প ছিল তাঁর দলেরই। না হলেও সফল অধিনায়ককে পরের মরসুমের ছেড়ে দেওয়ার উদাহরণও তো কম নেই। এই মরসুমটা বিরাট আপনার। শ্রেয়াসের জন্য এখনও অনেক দিন পড়ে রয়েছে, তাই হতাশ হওয়ার কোনও জায়গা নেই।
প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে
জাস্ট দুনিয়ার সঙ্গে গোটা বিশ্বকে রাখুন নিজের পকেটে। Follow Us On: Facebook, Twitter, Google