ছিটকে গেল মোহনবাগান, সেমিফাইনালে জামশেদপুর

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: হিরো আইএসএল চ্যাম্পিয়ন এটিকে মোহনবাগানকে ছিটকে দিয়ে হিরো সুপার কাপের সেমিফাইনালে নিজেদের জায়গা পাকা করে ফেলল জামশেদপুর এফসি। শুক্রবার তারা এটিকে মোহনবাগানকে ৩-০ গোলে হারিয়ে চলতি সুপার কাপের প্রথম সেমিফাইনালিস্ট হিসেবে নিজেদের নাম খোদাই করে ফেলল। এর আগে এফসি গোয়াকেও হারিয়েছিল তারা। শুক্রবার সবুজ-মেরুন বাহিনীর কাছ থেকে দ্বিতীয় জয় ছিনিয়ে নিয়ে ছ’পয়েন্ট নিয়ে সেমিফাইনালে প্রবেশ করল।

গ্রুপ সি-তে এটিকে মোহনবাগানের পয়েন্ট সংখ্যা তিন। শেষ ম্যাচে তারা এফসি গোয়াকে হারালে বা জামশেদপুর যদি গোকুলামের কাছে হেরেও যায়, তা হলেও কলকাতার দল সেমিফাইনালে যেতে পারবে না। কারণ, সেক্ষেত্রে জামশেদপুর ও তাদের পয়েন্ট সমান হলেও শুক্রবারের এই হারের ফলে হেড টু হেড রেকর্ডের ভিত্তিতে ছিটকে যাবে। সে জন্যই জামশেদপুর এফসি এ দিন জিতে শেষ চারে জায়গা পাকা করে নিল।

এ দিন প্রথমার্ধে এটিকে মোহনবাগানের রক্ষণের দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে জোড়া গোল করে দলকে এগিয়ে দেন ইস্পাতনগরীর দলের তরুণ উইঙ্গার বরিস সিং। ম্যাচের একেবারে শেষ মুহূর্তে হিরো আইএসএলের গোল্ডেন গ্লাভস জয়ী গোলকিপার বিশাল কয়েথের হাত থেকে ছিটকে আসা বলে শট নিয়ে গোল করেন হ্যারি সয়্যার। এটিকে মোহনবাগানের রক্ষণের মতো আক্রমণ বিভাগও এ দিন কার্যত নিষ্ক্রীয় হয়ে পড়ে।

শুরু থেকে প্রতিপক্ষকে চাপে রেখে ২২ মিনিটের মাথাতেই জামশেদপুরকে এগিয়ে দেন বরিস সিং। বক্সের বাঁদিক থেকে রাফায়েল ক্রিভেলারোর মাপা ক্রসে টোকা দিয়ে প্রতিপক্ষের জালে বল জড়িয়ে দেন বরিস (১-০)। ক্রিভেলারোকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন প্রীতম কোটাল। কিন্তু তাঁকে ধোঁকা দিয়ে দুর্দান্ত ক্রস বাড়ান তিনি এবং বরিস ছিলেন কার্যত অরক্ষিত।

প্রতি আক্রমণে এটিকে মোহনবাগানের চেয়ে জামশেদপুর এফসি-কে এ দিন বেশি ধারালো লাগে। ৪৩ মিনিটের মাথায় এমনই এক প্রতি আক্রমণ থেকে দ্বিতীয় গোলটি তুলে নেন বরিস সিং। সেন্টার লাইনের পিছন থেকে ক্রিভেলারো ঋত্বিক দাসকে বল বাড়ালে বঙ্গতারকা বাঁ দিক দিয়ে উঠে বক্সে ঢুকে বরিস সিংকে ক্রস দেন। এ বারেও অরক্ষিত বরিস সেই মাপা ক্রসে বুটোর টোকায় বল ঠেলে দেন গোলে (২-০)।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে এটিকে মোহনবাগান আক্রমণের ধার বাড়ায়। ৫০ মিনিটের মাথায় হুগো বুমৌস অফ সাইড থাকায় গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন। ৫৫ মিনিটের মাথায় ফ্রি কিক থেকে গোলের বাইরে বল পাঠান দিমিত্রিয়স পেট্রাটস। ৫৭ মিনিটে পেট্রাটসের কাছ থেকে পাস পেয়ে আশিস রাই ডানদিকে দিয়ে গোল করার চেষ্টা করলেও তিনি সাইড নেটে শট মারেন।
জামশেদপুরের দুর্ভেদ্য রক্ষণের দেওয়ালে চিড় ধরানো বেশ কঠিন হয়ে ওঠে সবুজ-মেরুন বাহিনীর পক্ষে। এ ক্ষেত্রে দূরপাল্লার শট বা সেটপিস থেকে গোল ছাড়া কোনও উপায় ছিল না। ৬৬ মিনিটের মাথায় বিপক্ষের বক্সের সামনে থেকে নেওয়া পেট্রাটসের ফ্রি কিক গোলের বাইরে দিয়ে চলে যায়।

আক্রমণে গতি আনার উদ্দেশ্যে ৬৮ মিনিটের মাথায় মনবীর সিংয়ের জায়গায় আশিক কুরুনিয়ানকে নামায় এটিকে মোহনবাগান। মনবীর এ দিন ছন্দে ছিলেন না। বাঁ দিক দিয়ে কিছু আক্রমণ হলেও ডানদিক দিয়ে তিনি সে ভাবে আক্রমণ হানতে পারেননি। অন্যদিকে, ৭৩তম মিনিটে চিমার জায়গায় হ্যারি সয়্যারকে নামায় জামশেদপুর। ৭৭ মিনিটের মাথায় গ্ল্যানের জায়গায় কিয়ান নাসিরি নামেন আক্রমণে গতি বাড়াতে। কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি।

শেষ ১৫ মিনিট নিজেদের গোলের সামনে প্রায় দেওয়াল তুলে দেয় জামশেদপুর এফসি। দলের প্রায় আট-ন’জনই চলে আসেন নিজেদের দূর্গ রক্ষা করতে। এই অবস্থাতেও ম্যাচের একেবারে শেষে, স্টপেজ টাইমে কাউন্টার অ্যাটাক থেকে তৃতীয় গোল করে জয় সুনিশ্চিত করে ইস্পাতনগরীর দল।

পরিবর্ত ফরোয়ার্ড ইশান পন্ডিতা বক্সের বাইরে থেকে দূরপাল্লার শট নেন গোলে। সেই শট বিশালের হাতে লেগে সামনে ছিটকে এলে সয়্যার তা ঠেলে দেন দ্বিতীয় পোস্টের দিকে এবং পোস্টে লেগে তা গোলে ঢুকে যায় (৩-০)। এটিকে মোহনবাগান ও এফসি গোয়ার মুখোমুখি হওয়া এখনও বাকি থাকলেও আগামী মঙ্গলবার তা নিয়মরক্ষার ম্যাচ ছাড়া আর কিছুই না।

এটিকে মোহনবাগান দল: বিশাল কয়েথ (গোল), আশিস রাই, প্রীতম কোটাল (অধি), স্লাভকো দামিয়ানোভিচ (ফেদিকো গায়েগো), শুভাশিস বোস, কার্ল ম্যাকহিউ, গ্ল্যান মার্টিন্স (কিয়ান নাসিরি), হুগো বুমৌস, দিমিত্রিয়স পেট্রাটস, লিস্টন কোলাসো, মনবীর সিং (আশিক কুরুনিয়ান)।

 (লেখা ও ছবি— আইএসএল ওয়েব সাইট থেকে)

প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে

জাস্ট দুনিয়ার সঙ্গে গোটা বিশ্বকে রাখুন নিজের পকেটে। Follow Us On: FacebookTwitterGoogle