Abortion Law-এর কারণে জোড় করে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে ব্রেন ডেড মহিলাকে

Abortion Law

জর্জিয়ার কঠিন Abortion Law-এর কারণে, জর্জিয়ার ৩০ বছর বয়সী এক গর্ভবতী মহিলাকে লাইফ সাপোর্টে রেখে দিতে বাধ্য করা হয়েছে। অ্যাড্রিয়ানা স্মিথ তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন, কারণ ডাক্তাররা আইন মেনে তাঁর সন্তান প্রসব করানোর অপেক্ষায় রয়েছেন। তাঁর পরিবার জানিয়েছে যে জর্জিয়ার গর্ভপাতের বিধিনিষেধের কারণে হাসপাতাল এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

সংবাদ সংস্থা এপি-র এক প্রতিবেদন অনুসারে, মিসেস স্মিথের সন্তানের জন্মের তারিখ এখনও তিন মাসেরও বেশি সময় বাকি থাকায়, ব্রেন ডেড হয়ে যাওয়া গর্ভবতী মহিলাকে জীবিত রাখার ক্ষেত্রে দীর্ঘতম রেকর্ড হয়ে উঠতে পারে এই ঘটনা বলে মনে করা হচ্ছে।


তার পরিবার এমন একটি আইনের কারণে রীতিমতো মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, যতক্ষণ ভ্রূণের হৃদযন্ত্রের কার্যকলাপ চলছে ততক্ষণ তাঁর পরিবারকে লাইফ সাপোর্ট বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি।

কে এই অ্যাড্রিয়ানা স্মিথ, একবার কয়েকমাস পিছনে গেলেই জানা যাবে বিস্তারিত ঘটনা।

৩০ বছর বয়সী অ্যাড্রিয়ানা স্মিথ আটলান্টার এমোরি বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে নার্সের পদে কাজ করতেন। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে, যখন তিনি প্রায় ন’সপ্তাহের গর্ভবতী ছিলেন, তখন  একদিন তাঁর হঠাৎ প্রচন্ড মাথাব্যথা শুরু হয়। তাঁর মা, স্থানীয় একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে বলেন যে, স্মিথ সেই মাথা ব্যথার চিকিৎসার জন্য আটলান্টার নর্থসাইড হাসপাতালে গিয়েছিলেন। সেখানে তাঁকে অসুধ দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

পরের দিন সকালে যখন মিস স্মিথের প্রেমিক ঘুম থেকে ওঠেন, তখন তিনি দেখেন ঘুমের মধ্যেই শ্বাসকষ্ট হচ্ছে তাঁর। এমনকি তিনি অভ্যন্তরীণ রক্তপাতের ফলে তাঁর গোঙানির শব্দও শুনতে পান। তিনি সঙ্গে সঙ্গেই জরুরি পরিষেবায় ফোন করেন।

মিস স্মিথকে এমোরি বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়, যেখানে ডাক্তাররা আবিষ্কার করেন যে তাঁর মস্তিষ্কে রক্ত ​​জমাট বেঁধেছে। পরে তাঁর ব্রেন-ডেড ঘোষণা করা হয়।

তাঁর পরিবার, তাঁর ছোট ছেলে-সহ, যারা এখনও বিশ্বাস করে যে তাঁর মা ঘুমিয়ে আছেন, প্রতিদিন তাঁর বিছানার পাশে বসে থাকেন।

মিস স্মিথ বর্তমানে ২১ সপ্তাহের গর্ভবতী। ডাক্তাররা বলেছেন যে তাঁর শ্বাস-প্রশ্বাসের টিউব এবং অন্যান্য জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম অপসারণ করলে গর্ভাবস্থার অবসান ঘটবে। প্রতিবেদন অনুসারে, ডাক্তাররা মিস স্মিথকে লাইফ সাপোর্টে রাখার ইচ্ছা পোষণ করেন যতক্ষণ না ভ্রূণটি এমন একটি পর্যায়ে পৌঁছায়, প্রায় ৩২ সপ্তাহ, যেখানে শিশুটি গর্ভের বাইরে বেঁচে থাকতে পারে।

এবার দেখা যাক জর্জিয়ার গর্ভপাত নিষিদ্ধ আইন ঠিক কেমন—

জর্জিয়ার গর্ভপাত আইন, যা সাধারণত “হৃদস্পন্দন আইন” নামে পরিচিত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে কঠোর আইনগুলির মধ্যে একটি। এটি ভ্রূণের হৃদযন্ত্রের কার্যকলাপ সনাক্ত হওয়ার পরে, সাধারণত গর্ভাবস্থার ছয় সপ্তাহের কাছাকাছি সময়ে গর্ভপাত নিষিদ্ধ করে দেয়।

আইনটি মূলত ২০১৯ সালে পাস হয়েছিল, কিন্তু ২০২২ সালের ডবস বনাম জ্যাকসন মহিলা স্বাস্থ্য সংস্থার সিদ্ধান্তে মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট রো বনাম ওয়েডকে বাতিল করার পরেই এটি কার্যকর হয়। তারপর থেকে, জর্জিয়া এবং আরও বেশ কয়েকটি রক্ষণশীল রাজ্য একই রকম বিধিনিষেধ প্রয়োগ করেছে।

যদিও মায়ের জীবন ঝুঁকিতে থাকলে আইনটি ব্যতিক্রমের অনুমতি দেয়, এই ধরনের ধারাগুলি আইনি এবং নৈতিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে ঠিকই তবে এখনও তাতে কোনও পরিবর্তন আনা হয়নি।

২০২৪ সালে টেক্সাস সুপ্রিম কোর্টের একটি প্রধান রায়ে দেখা গিয়েছে, এই ব্যতিক্রমগুলি প্রায়শই সংকীর্ণভাবে ব্যাখ্যা করা হয়, এমনকি গুরুতর গর্ভাবস্থার জটিলতার মুখেও। তবে স্মিথের এই ঘটনা জর্জিয়া ভ্রূণ হত্যা আইনের ক্ষেত্রে একটি বড় নজির হিসেবে থেকে যাবে নিশ্চিত।

প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে

জাস্ট দুনিয়ার সঙ্গে গোটা বিশ্বকে রাখুন নিজের পকেটে। Follow Us On: FacebookTwitterGoogle