World Mental Health Day: মন ভাল নেই শুনলেই পাশে থাকুন

World Mental Health Day

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: আসলে মনের উপর তো কারও জোড় নেই। কিন্তু পাশে তো থাকা যায় কাছের মানুষদের। যাঁদের সঙ্গে নিত্যদিনের ওঠা-বসা, থাকা-খাওয়া—সেই মানুষগুলোকে একটু তো বোঝার চেষ্টা করাই যায়। আসলে বর্তমান পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে কোনও কিছুই উড়িয়ে দেওয়ার মতো নয়। এক সময় যা যা পাগলামো বলে উড়িয়ে দিয়েছেন বা মনে হয়েছে বাজে কথা বলছে অথবা কাউকে যখন দুঃখবিলাসী ভেবে অবহেলা করেছেন—জানবেন, কোনওটারই কারণ সহজ ছিল না। ভুল বা পাগলামো ছিল না। আসলে মনের গভীরে কোথাও জমা হচ্ছিল কঠিন অসুখ (World Mental Health Day)। যা সারাতে ওষুধ লাগে না। বরং লাগে একটু ভালবাসার পরশ। এটাই আমরা করতে পারি না। পারলে মেন্টাল হেলথ সমস্যা নির্মূল হয়ে যেত পৃথিবী থেকে।

মানসিক স্বাস্থ্যের উপর অনেক কিছু নির্ভর করে। মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতিতে কঠিন হয়ে পড়ে শারীরিক স্বাস্থ্যের যত্ন। আমরা ভুলে যাই মন আর শরীর আলাদা নয়। কারও সামান্য জ্বর, সর্দি, কাশি হলে আমরা যতটা চিন্তিত হয়ে পড়ি ততটা কখনওই কারও মনের সমস্যায় করি না। কিন্তু হওয়া উচিত উল্টোটাই। ডাক্তার, বদ্যি, পথ্য কিছুর দরকার হয় না মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে। আসল সুশ্রুষা তো রয়েছে চার পাশেই। শুধু চার পাশের মানুষগুলোকে বুঝতে হবে।

মানুষকে সব থেকে সমস্যায় ফেলে প্রত্যাশা। নিজের প্রত্যাশা আর তা পূরণ না হওয়া। আবার অন্যের প্রত্যাশার পাহাড়, যা সব সময় পূরণ করতে না পারা। দুই প্রত্যাশার চাপে জেরবার মানুষ ক্রমশ নিজেকে গুটিয়ে ফেলতে শুরু করে। আর তখনই মনের উপর চেপে বসে নানা রকমের ভাবনা। নানান মনগড়া কাহিনী তৈরি হতে থাকে। তৈরি হয় আতঙ্ক। গ্রাস করে একাকিত্ব। আর তখনই উধাও হয়ে যায় ঘুম আর খিদে। যার প্রভাব পড়ে শরীরে। আর এখানেই সব থেকে বড় ভূমিকা নিতে পারে কাছের মানুষরা। সেটা বাবা-মা হতে পারে, ভাই-বোন বা ছেলে-মেয়ে, স্বামী-স্ত্রী—যে কেউ হতে পারে। শুধু দেখতে হবে জীবনের প্রতি ভালবাসাটা যেন কমে না যায়। জীবনের প্রতি ভালবাসা বাঁচিয়ে রাখে কাছের মানুষেরা, ভালবাসার, স্নেহের, নির্ভরশীলতার সম্পর্কগুলো।

World Mental Health Day

সবার আগে সেই মানুষটিকে গুরুত্ব দিতে হবে যে মানসিক সমস্যায় ভুগছে। তাঁকে বোঝাতে হবে বাকিদের জীবনে তাঁর গুরুত্ব। তাঁর মতামতকে গুরুত্ব দিতে হবে। তাঁর কথা ইচ্ছে না করলেও শুনতে হবে। যখনই সে নিজের পরিচিত জগতে গুরুত্ব পেতে শুরু করবে তখনই সে নিজেকে গুরুত্ব দিতে শুরু করবে। আরও একটা বিষয় বাড়ির বড়রা ছোটদের ক্ষেত্রে করে থাকি। সেটা হল তুলনা। একদম জীবন থেকে তুলনাটা মুছে ফেলুন। অন্য কারও সঙ্গে তুলনা একজনকে নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে ফেলে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। নিজেকে খারাপ মনে হতে শুরু করে, পিছিয়ে পড়া মনে হয়—আর তখনই সে নিজেকে গুটিয়ে নেয়। বরং ভাল না হলেও তাঁর কাজের প্রশংসা করুন। প্রশংসা ছোট থেকে বড় সবাইকে উৎসাহিত করে। প্রশংসায় কার্পণ্য করবেন না কখনও। একটা ছোট্ট প্রশংসা একজন মানসিকভাবে বিধ্বস্ত মানুষকে ঘুরে দাঁড়ানোর রসদ দিতে পারে।

আসলে মানসিক সমস্যার কারণ যাই হোক না কেন তা বাড়িয়ে দেয় বিষয়টি সম্পর্কে আমাদের অজ্ঞতা। মনেরও যে অসুখ করে সেটা আমরা জানি না। জানলেও মানি না। আর মানলেও বোঝার ক্ষমতা নেই। কিন্তু পৃথিবীটা এখন বড্ড ছোট। হাতের মুঠোয় সব পাওয়া যায়। কাছের মানুষগুলোর জন্যই না হয় একঘেয়ে ঘ্যানঘ্যানে সিরিয়াল না দেখে মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানলেন। যা আপনার কাছের মানুষটিকে একটা ভাল জীবন দিতে পারে।

কারও কারও ক্ষেত্রে খুব দ্রুত মনের উপর প্রভাব ফেলে বিভিন্ন ঘটনা। কারও আবার সময় লাগে। মনের রূপ বোঝা মুশকিল। কিন্তু বুঝতে হবে। আর তা বুঝতে পারেন কাছের মানুষরাই। অবহেলাটা বন্ধ করতে হবে। দেখুন না পৃথিবীটাকে যদি সুস্থ মনের করে গড়ে তোলা যায়। কাজটা শুরু হোক নিজের ঘর থেকেই। কথায় আছে, ‘চ্যারিটি বিগিনস অ্যাট হোম’।

প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে

জাস্ট দুনিয়ার সঙ্গে গোটা বিশ্বকে রাখুন নিজের পকেটে। Follow Us On: FacebookTwitterGoogle